মেহেরপুরে জোড়া খুনের মামলায় ৯ জনের ফাঁসি

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজীপুরে দুই ভাইকে হত্যার দায়ে ৯ জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কাজীপুর গ্রামের আব্দুল হালিম, আতিয়ার রহমান, জালাল উদ্দীন, শরিফুল ইসলাম, শরিক আলী, দবির উদ্দীন, আজিজুল হক, মনির হোসেন ও ফরিদুল ইসলাম।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১৬ জুন সকালে কাজীপুর গ্রামের বর্ডারপাড়ার মাঠ থেকে ওই গ্রামের পোস্ট অফিস পাড়ার কিয়ামুদ্দীনের দুই ছেলে আবুজেল (৩৫) ও রফিকুল ইসলাম (৪০) এর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ১টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে তৎকালীন মেহেরপুর পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল বাকি ও র‌্যাব-৬ (গাংনী) ক্যাম্প কমান্ডার লে. সাজ্জাদ রায়হান এবং গাংনী থানার ওসি বিমল কৃষ্ণ মল্লিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

মামলার বিবরণে আরো জানা গেছে, ২০১২ সালের ৫ জুন কাজীপুর এলাকায় ফেনসিডিলের একটি বড় চালান ধরা পড়ে। ওই ঘটনায় আবুজেল ও রফিকুল ইসলামের ফেনসিডিল ধরিয়ে দেয়ার সঙ্গে হাত রয়েছে এমন অভিযোগ তোলা হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০১২ সালের ১৫ জুন দিবাগত রাতে বিষয়টি মীমাংসা করবে বলে দুই ভাইকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেই আসামীরা। পরদিন (১৬ জুন) সকালে কাজীপুর গ্রামের মন্ডল বর্ডারপাড়ার বাংলাদেশ ভারত ১৪৫ নং/এস-৬ নং সীমানা পিলারের কাছ থেকে বাংলাদেশ সীমানার ভেতরে ৭০-৭৫১ দক্ষিণে লাল্টুর মরিচ ক্ষেত থেকে তাদের দুই ভাইয়ের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। তখন ওই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

পরে দুই সহোদর হত্যার ঘটনায় তাদের বড় বোন জরিনা বেগম বাদী হয়ে ৩০২/৩৪ ধারায় গাংনী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনী থানার ওসি (তদন্ত) আসাদুজ্জামান মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলায় ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষে আসামী হালিম, আতিয়ার, জালাল উদ্দিন, শরিফুল ইসলাম, শরিফ, দবির উদ্দিন, আজিজুল, ফরিদ ও মনির নামের ৯ ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। একই সাথে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করা হয়। মামলার অপর আসামি আরিফ, রাজিব, আলমেস, হারুন ও ফারুকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদেরকে বেকসুর খালাস দেন।