মন গলেনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের, কমছে না হজ প্যাকেজ

চলতি বছর হজের প্যাকেজ মূল্য ঘোষণার পর থেকেই তা অতিরিক্ত উল্লেখ করে টাকার অঙ্ক কমানোর দাবি উঠেছিল। বিষয়টি আমলে নিয়ে প্যাকেজ মূল্য কমাতে আলোচনা হয়েছে সংসদীয় কমিটি থেকে শুরু করে উচ্চ আদালত পর্যন্ত। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি, মন গলেনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) হজ নিবন্ধনের শেষ দিন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল কাশেম সাফ জানিয়ে দিলেন, হজ প্যাকেজ কমানোর কোনো সুযোগ নেই সরকারের কাছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ডলারের দাম ও বিমান ভাড়া, বাসা ভাড়া এবং মোয়াল্লেম ফি বেড়েছে। তাই হজ প্যাকেজের মূল্য বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে বুধবার (১৫ মার্চ) হাইকোর্টকেও এমনই তথ্য জানিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। বলেছিল, হজ প্যাকেজ কমানো সম্ভব নয়।

এর আগে মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) চলতি মৌসুমে ধর্ম মন্ত্রণালয় ঘোষিত হজ প্যাকেজকে অমানবিক বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশে হজের জন্য সরকার আলাদা বাজেট রাখে; কিন্তু বাংলাদেশে তা নেই। হজের প্যাকেজমূল্য অনেক বেশি হওয়ায় আমরাই হজে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আর সেখানে গরিব মানুষ কীভাবে যাবে।’

একইভাবে বুধবার হজযাত্রীদের বিমানভাড়া কমানোর সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি। তারা বলেছে, বিমানভাড়া ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা থেকে কমিয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা করতে।

এদিকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল কাশেম জানান, আজই শেষ হচ্ছে নিবন্ধনের সময়। এখন পর্যন্ত ২৩ হাজার ৫৮৯ জনের কোটা বাকি আছে। যারা নিবন্ধন করতে চান, তাদের রাত ১১টা পর্যন্ত নিবন্ধন করার সুযোগ আছে।

এরপর কোটা পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিবন্ধন সার্ভার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। নিবন্ধন ভাউচার প্রস্তুতের পরবর্তী দুই কার্যদিবসের মধ্যে অর্থ ব্যাংকে জমা দিয়ে নিবন্ধন নিশ্চিত না করলে ওই ভাউচার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে‌ বলেও জানানো হয়।

কোটা পূরণ না হওয়ায় এ বছর সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে হজ নিবন্ধনের সময়সীমা আগেও কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছিল। আজকের পর আর সময় বাড়ানো হবে না বলেও গত ৭ মার্চ এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়।

আগামী ২৭ জুন (৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে)। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার এবং অবশিষ্ট ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।

চলতি বছর সরকারিভাবে হজ পালনে খরচ হবে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। আর বেসরকারিভাবে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা।