কাপ্তাইয়ে বিস্ফোরণ, ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া শিশুকন্যা ফারিয়া খুঁজছে তার বাবা-ভাইকে

কাপ্তাই প্রতিনিধঃ কাপ্তাই উপজেলাধীন কাপ্তাই ইউনিয়নের বাদশা মিয়া টিলায় বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত বাবা, ছেলে ও চিকিৎসাধীন দগ্ধ মা’কে খুঁজে ফিরছে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া নিহত ইসমাইলের শিশু কন্যা ইসরাত জাহান ফারিয়া(৭)। ফারিয়া স্থানীয় দারুল আরকাম মাদরাসার ২য় শ্রেণীর ছাত্রী। ঘটনারদিন সন্ধ্যায় পাশের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় ফারিয়া। গত সোমবার (৮ জানুয়ারী) নিহত মোঃ ইসমাইল মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, বেঁচে যাওয়া ফারিয়া চুপচাপ বসে আছে। তার বাবা, ভাই ও মায়ের কথা জিজ্ঞাসা করতেই সে শুধু বলে, আমার মা অসুস্থ, তিনি হাসপাতালে আছেন। আর বাবা ও তার খেলার সাথী ছোট ভাইয়ের কথা বললে, সে কিছুই বলেনা, শুধু ছলছল করে তাকিয়ে থাকে। স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, নিহত ইসমাইল মিয়া ছিলেন হতদরিদ্র একজন নৌকার মাঝি। নৌকা চালিয়ে দৈনিক যা আয় করতো তা দিয়ে কোন মতে সংসার চলত। তাদের সম্পদ বলতে কিছুই নেই। শিশুটির মায়ের অবস্থাও সংটাপন্ন। বাঁচা মরা ওপর ওয়ালার হাতে। এঅবস্থায় অবুঝ শিশু ফারিয়ার ভবিষ্যৎ কি হবে। তার লেখাপড়া সহ ভরণ পোষন কি করে চলবে। এসব এখন প্রতিবেশিদের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। তারা চাচ্ছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবুঝ শিশু ফারিয়ার দায়িত্ব নিক। এদিকে, বিস্ফোরণের ঘটনায় ওই ঘরের সবকিছু এখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। বিস্ফোরণ হওয়া রান্না ঘরের এখানে সেখানে এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে। এখনো চা এবং ভাত রান্না করার চাউল পড়ে আছে রান্না ঘরে। এই রান্না ঘরেই চা বানাতে চুলায় আগুন জ্বালানোর পরই ওই বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে বলে জানা গেছে। অপরদিকে, বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে একাধিক সংস্থা কাজ করছে। তবে এখনো পর্যন্ত ঘটনার কোন ক্লু পায়নি বলে জানিয়েছে কাপ্তাই থানার ওসি মোঃ জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, তদন্ত চলছে।তদন্ত শেষ হলে বিস্তারীত জানা যাবে। মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে কাপ্তাই এএসপি সার্কেল রওশন আরা রব জানান, তেমন কোন অগ্রগতি নেই। তদন্ত চলছে। উল্লেখ্য, গত রবিবার সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে ৬টায় কাপ্তাই হ্রদ সংলগ্ন বাদশা মাঝির টিলায় নৌকার মাঝি মোঃ ইসমাইল মিয়ার বসত ঘরে হঠাৎ ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে মোঃ ইসলাইল মিয়া(৪৫) ও তার পুত্র মোঃ রিফাত(৬) নিহত হয়। এঘটনায় আহত হয় নিহত ইসমাইলের স্ত্রী সখিনা বেগম(৩৫)। গুরুতর আহত অবস্থায় সখিনাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।