চীনের তৃতীয় প্রধান জনবহুল প্রদেশ হেনান। সেখানকার জনগণের মধ্যে শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ করোনায় আক্রান্ত। তাদের মোট সংখ্যা হবে কমপক্ষে ৮ কোটি ৮৫ লাখ। প্রাদেশিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কান কুয়ানছেং সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
সম্প্রতি লকডাউন, কোয়ারেন্টিন এবং গণহারে পরীক্ষা করানোর প্রতিবাদে বিরল বিক্ষোভ হয় চীনে। জনতার এ দাবির মুখে সরকার বিধিনিষেধ শিথিল করার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু আসল কথা হলো, অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার জন্য চীন সরকার ডিসেম্বরে জিরো-কোভিড নীতি বাতিল করে। তুলে নেয়া হয় সব বিধিনিষেধ। ৮ই জানুয়ারি থেকে আকাশপথ, স্থলপথ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। মিডিয়ার রিপোর্টে বলা হচ্ছে, এতে ভয়াবহভাবে নতুন করে করোনা সংক্রমণ দেখা দিয়েছে।
হাসপাতালগুলোতে জায়গা নেই। করিডোরে স্ট্রেচারের ওপর অবস্থান করছে রোগী। এসব নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। এমন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে চীন। তবে হেনান প্রদেশে এসব মানুষ কখন আক্রান্ত হয়েছেন তার সুনির্দিষ্ট কোনো টাইমলাইন প্রকাশ করেননি কান কুয়ানছেং। ধারণা করা হচ্ছে, হেনান প্রদেশে এত ভয়াবহ সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে গত দু’এক সপ্তাহে।
কান কুয়ানছেং বলেছেন, হেনান প্রদেশে হাসপাতালে জ্বর নিয়ে উপস্থিতি সর্বোচ্চে পৌঁছে ১৯শে ডিসেম্বর। তারপর থেকে আস্তে আস্তে কমে আসছে সংক্রমণ। চীনের কেন্দ্রীয় সরকার করোনা সংক্রমণ নিয়ে যে সংখ্যা প্রকাশ করছে হেনান প্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা তার চেয়ে আকাশচুম্বী। সরকারি হিসাবমতে, ১৪০ কোটি মানুষের দেশে কোভিড নীতি পরিবর্তনের পর মাত্র এক লাখ ২০ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন মাত্র ৩০ জন। রোববার মূল চীন ভূখণ্ডে তিনজন মারা যাওয়ার রিপোর্ট করেছে। আগের দিনের চেয়ে এই সংখ্যা এক বেশি। এখন গণহারে করোনার পরীক্ষা আর বাধ্যতামূলক নয়। ফলে এই প্রাদুর্ভাব কি অবস্থায় আছে সে বিষয়ে সরকারি সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে কোভিডে মৃত্যু কম দেখা যাচ্ছে।
স্থানীয় ও অন্য প্রাদেশিক কর্মকর্তারাও যে ডাটা দিয়েছেন তা কেন্দ্রীয় সরকারের ডাটার থেকে অনেক বেশি ফারাক। বড়দিনের প্রাক্কালে বন্দরনগরী কিংডাওয়ে একজন সিনিয়র স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রিপোর্ট করেন যে, প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন প্রায় ৫ লাখ মানুষ। খবর থেকে এই সংখ্যাগুলো দ্রুতই মুছে ফেলা হচ্ছে।