যুক্তরাষ্ট্র-কানাডায় ভয়াবহ ঠাণ্ডায় ৩৮ মৃত্যু, হাজারো ফ্লাইট বাতিল

ভয়াবহ ঠাণ্ডা গ্রাস করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাকে। এমন সর্বগ্রাসী ‘আর্কটিক ফ্রিজ’ সংশ্লিষ্ট কারণে কমপক্ষে ৩৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। কর্মকর্তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এতে নিহতের সংখ্যা ৩৪। সেখানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিউ ইয়র্ক রাজ্যের বাফেলো শহর। পশ্চিমাঞ্চলীয় বৃটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের মেরিট শহরের কাছে বরফে ঢাকা একটি সড়কে বাস দুর্ঘটনায় কানাডায় মারা গেছেন কমপক্ষে ৪ জন। অপ্রত্যাশিত এই শীতকালীন ঝড় কানাডা থেকে দক্ষিণে রিও গ্রান্ডে পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। আবহাওয়া পূর্বাভাসকারীরা বলছেন, কয়েক দিনের মধ্যে এই ঝড়ো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে। তবে অপ্রয়োজনে সফর না করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

কয়েকদিন ধরে এই ঝড় চারদিকে মারাত্মক ক্ষতি করছে। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেও অনেক স্থানে তা পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা এপির মতে, রোববার বিকেল নাগাদ দুই লাখ ভোক্তা বিদ্যুতহীন অবস্থায় ছিল। এর আগে এই সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ। এরই মধ্যে বাতিল করা হয়েছে হাজার হাজার ফ্লাইট। এর ফলে অসংখ্য মানুষ বড়দিনে তাদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হতে পারেননি। রোববারও হিম ঠাণ্ডা বাতাসের সতর্কতার মধ্যে ছিলেন কমপক্ষে সাড়ে ৫ কোটি মার্কিনি। এই ঝড়কে আখ্যায়িত করা হচ্ছে ‘বোম্ব সাইক্লোন’ হিসেবে।
বাফেলোর অধিবাসী ও নিউ ইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল বলেছেন, সবচেয়ে ভয়াবড় ঝড়ের কবলে বাফেলো। ঘটনা যুদ্ধক্ষেত্রের মতো রূপ নিয়েছে। রাস্তার পাশে গাড়িগুলো পড়ে আছে। তিনি আরও বলেন, জীবন-হুমকিতে থাকার মতো অবস্থা অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন অধিবাসীরা। এসব এলাকায় যারা আছেন তাদেরকে ঘরের ভিতরই থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

ইরি কাউন্টিতে মারা গেছেন ১২ জন। কিছু মানুষকে তাদের গাড়ির ভিতর বা তুষারের মধ্যে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। ঝড়ের কারণে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে ভারমন্ট, ওহাইও, মিসৌরি, উইসকনসিন, কানসাস এবং কলোরাডো থেকেও। সাউথ ফ্লোরিডার তাপমাত্রা এত কমে গেছে যে, সরীসৃপগুলো জমে শক্ত হয়ে গাছ থেকে পড়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমের রাজ্য মন্টানা সবচেয়ে ঠাণ্ডায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে তাপমাত্রা কমে দাঁড়িয়েছে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা মাইনাস ৪৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।

কানাডায় অন্টারিও এবং কুইবেক প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কুইবেকে এক লাখ ২০ হাজার ভোক্তা রোববারও বিদ্যুৎহীন ছিলেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কয়েকদিন লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।