হিজাব ইস্যুতে দেশি-বিদেশি এনজিওতে নারী কর্মী নিষিদ্ধ করলো তালেবান

হিজাব না পরার কারণ দেখিয়ে দেশী-বিদেশি এনজিওতে নারীদের কাজ করা নিষিদ্ধ করেছে তালেবান। এই নির্দেশ লঙ্ঘন করা হলে তাদের লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দেয়া হয়েছে। তালেবান তাদের নির্দেশের পক্ষে ব্যাখ্যা দিয়ে বলছে, এনজিও কর্মীরা হিজাব না পরে ইসলামী শরিয়ার পোশাকের আইন ভঙ্গ করছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

খবরে বলা হয়, শনিবার জারি করা তালেবানের এই নির্দেশকে মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করে নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। কিছুদিন আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়। আফগানিস্তানের যে নারী এনজিও কর্মীরা আর্থিক সংকটে পড়তে যাচ্ছেন। একজন বলেন, আমি যদি কাজ করতে যেতে না পারি, আমার পরিবারে খরচ কে দেবে? আরেকজন এই নির্দেশকে ‘হতাশাজনক’ জানিয়ে বলছেন, তিনি তালেবানের পোশাকের আইন মেনেই কাজ করতেন। আরেকজন নারী তালেবানের ইসলামিক নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলছেন, এর ফলে এখন থেকে তার ঘরের খরচ আর ছেলেমেয়ের খাবার জোগাতে হিমশিম খেতে হবে। তার দাবি, সারা বিশ্ব আমাদের তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে, কিছুই করছে না।

তালেবানের ওই নির্দেশ দেশি-বিদেশি সব এনজিওর জন্য প্রযোজ্য হবে বলে জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এর ফলে লাখ লাখ মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা কার্যক্রম ব্যাহত হবে।

সারা বিশ্ব জুড়েই মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে নারীরা প্রধান ভূমিকায় কাজ করেন। এই সিদ্ধান্ত আফগান জনগণের জন্য বিপর্যয়কর হবে। অপরদিকে তালেবানের এই নির্দেশকে মানবাধিকারের মৌলিক নীতিগুলোর গুরুতর লঙ্ঘন বলে বর্ণনা করেছেন জাতিসংঘের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
সেভ দ্যা চিলড্রেন জানিয়েছে, তারা এ নিয়ে তালেবান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবে। কিন্তু নারীদের যদি কাজ করতে দেয়া না হয়, তাহলে হয়তো তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে ফেলতে হবে। বেসরকারি সংস্থাগুলোর কাজে নারী ও শিশুদের কাছে সেবা পৌঁছানোর জন্য নারী কর্মী থাকা অত্যাবশ্যক। কেয়ার ইন্টারন্যাশনালের একজন কর্মকর্তা মেলিসা কর্নে বলেন, যেখানে পুরো দেশ জুড়েই দুর্ভিক্ষের একটা ঝূঁকি রয়েছে, সেখানে নারী কর্মীদের ছাড়া মানবিক পরিস্থিতির খুব তাড়াতাড়ি অবনতি হবে।