শাহবাগ থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত নারীকে টেনে নিয়ে গেল ঘাতক প্রাইভেটকার

রাজধানীর শাহবাগে প্রাইভেট কারের চাপায় এক নারীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া পথচারী নারীর নাম রুবিনা আক্তার (৪৫)। প্রাইভেট কারটির চালকের আসনে ছিলেন আজহার জাফর শাহ নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানান, শুক্রবার বিকেলে ঢাবির চারুকলার সামনে থেকে এক নারী পথচারী প্রাইভেট কারে চাপা পড়ে। এ সময় নারীটির ওড়না চাকার সাথে পেঁচিয়ে যায়। চালক গাড়িটি না থামিয়ে নারীকে প্যাঁচানো অবস্থায় চালাতে থাকেন। আহত ওই নারীকে টেনেহিঁচড়ে রাজু ভাস্কর্য, ভিসি চত্বর হয়ে নীলক্ষেত পর্যন্ত গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যান ঢাবির ওই সাবেক অধ্যাপক। এ সময় আশেপাশে ক্ষুব্ধ জনতা তাকে পেছন থেকে ধাওয়া দেয়। এতে গাড়িটির গতি আরও বাড়িয়ে দেন ঘাতক এই চালক। নীলক্ষেতে বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে ধরে ফেলে গনপিটুনি দেয়। গাড়িটিও ভাঙচুর করে জনতা।

পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলে পথচারী নারী মারা যায় বলে নিশ্চিত করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

অন্যদিকে গণপিটুনি খাওয়া চালকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা যায়।
নিহত রুবিনা আক্তারের বোন জামাই বলেন, রুবিনা আক্তার আমার সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে তেজগাঁওয়ের বাসা থেকে তার বোনের বাসা হাজারীবাগে যাচ্ছিলেন। আমরা শাহবাগ জাদুঘরের সামনে পৌঁছালে পেছন থেকে একটি প্রাইভেটকার ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে তাকে টেনে হিঁচড়ে নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত নিয়ে আসে।

তিনি আরও বলেন, আমি পেছন থেকে প্রাইভেটকারের চালককে ডাকতে ডাকতে এক কিলোমিটার চলে আসি। কিন্তু চালক গাড়ি থামাননি। পরে নীলক্ষেত মোড় এলাকায় আসলে আশপাশের লোকজন গতিরোধ করে চালককে গণধোলাই দেয়। এছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় রুবিনা আক্তারকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার বাবুপুরা ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক আরিফ হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, আমরা খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেলে আসি এবং একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। মোটরসাইকেলে থাকা ওই নারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আহত জাফর শাহ নামে এক ব্যক্তি জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন।