হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছেড়েছে

রাউজান প্রতিনিধি: প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছেড়েছে । গত ২৫ ্মে শনিবার সকাল থেকে বিকাাল পর্যন্ত সময়ে মা মাছ ডিমরে নমুনা ছাড়ে ।

নমুনা ডিম ছাড়ার পর থেকে ডিম সংগ্রহকারীরা হালদা নদীর বিভিন্ন স্পটে মা মাছ কবে ডিম ছাড়বে এই প্রতিক্ষায় ন্যেকা ও জাল নিয়ে বসে থাকে । গত ২৫ মে শনিবার দিবাগত রাত ৯টার সময় থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত সময়ে নদীতে হালদা নদীতে মাছ ডিম ছাড়তে শুরু করে । এবার প্রচুর পরিমান ডিম ছেড়েছে মা মাছ। । গত ২৫ মে শনিবার রাতে হালদা নদী থেকে শত শত ডিম সংগ্রহকারী নৌকা জাল নিয়ে হালদা নদীর অংকুরী, ঘোনা, পশ্চিম গহিরা, বিনাজুরী, কাগতিয়া, কাসেম নগর, আজিমের ঘাট, গোলজার পাড়া, মগদাই, নাপিতের ঘাট, পশ্চিম আবুর খীল, উরকিরচর, খলিফার ঘোনা, সার্কদা, মোকামী পাড়া, কচুখাইন ও হাটহাজারীর গড়দুয়ারা, , নায়া হাট, মার্দ্রাসা, দক্ষিন মার্দ্রাসা, আমতুয়া, রামদাশ হাট, মাছুয়া ঘোনা এলাকায় হালদা নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করে । রাউজানের পশ্চিম গহিরা অংকুরী ঘোনা এলাকার ডিম সংগ্রহকারী বিতান বড়–য়া বলেন তার তিনটি নৗকা নিয়ে নাপিতের ঘাট এলাকায় নদী থেকে২৪ বালতি ডিম সংগ্রহ করে । ডিম সংগ্রহকারী রুপম বড়–য়া বলেন ৪টি নৌকা নিয়ে হালদা নদী থেকে ২০ বালতি ডিম সংগ্রহ করে । ডিম সংগ্রহকারী নেপাল বড়–য়া বলেন আমি একটি নৌকা নিয়ে ৪ বালতি ডিম সংগ্রহ করেছি । ডিম সংগ্রহকারী রুপল বড়য়া ১টি নৌকা নিয়ে ৪ বালতি ডিম সংগ্রহ করে বলে জানান । শ্যামল বড়–য়া ২টি নৌকা নিয়ে ৮ বালতি ডিম সংগ্রহ করে। কাগতিয়ার খোরশেদ বলেন সে দুটি নৌকা নিয়ে আজিমের ঘাট এলাকা থেকে দশ বালতি ডিম সংগ্রহ করে । হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুমে ডিম সংগ্রহকারীরা নদীর তীরে পুর্ব থেকে মাটির কুয়া খনন করো রাখা কুয়ায় ডিম ফুটানোর কাজে এখন ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন । হালদা প্রকল্পের টাকা দিয়ে নির্মিত হ্যাচারীগুলোর মধ্যে পশ্চিম গহিরা হ্যাচারী, কাগতিয়া হ্যাচারী নির্মানের পর থেকে ডিম ফুটানোর কুয়াগুলো অধিকাংশ ফাটল ধরায় এই সব কুয়ায় ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম ফুটাতে পারছেনা বলে জানান ডিম সংগ্রহকারীরা। রাউজানের মোবার খীল হ্যচারীটি মেরামত করায় মোবারকখীল হ্যাচারীতে ডিম ফুটানোর কাজ করছে। ডিম সংগ্রহকারীরা জানান হালদা নদীতে ডিম গত বৎসরের তুলনায় এবার মা মাছ ডিম ছেড়েছে বেশী । রাউজান উপজেলা মৎস অফিসের বেরাহান উদ্দিন জানান হালদা নদীতে প্রশাসনের কঠোর নজরদারীর কারনে ডিম ছাড়ার মৌসুমে যান্ত্রিক নৌযান চলাচল বন্দ্ব ও ড্রেজার ও পাওয়ার পাম্প দিয়ে বালু উত্তোলন বন্দ্ব থাকায় মা মাছ ডিম ছেড়েছে গত বৎসরের চেয়ে বেশী । কি পরিমাণ ডিম ছেড়েছে তা জানতে চাইলে রাউজান উপজেলা মৎস অফিসের ফিল্ড অফিসার বেরাহান উদ্দিন জানান, নদী থেকে সংগ্রহ করা মা মাছের ডিমের পরিমাণ কত তা নিশ্চিত করতে জরিপ চলছে । জরিপ শেষ হওয়ার পর সঠিক পরিমাণ বলা যাবে ।
প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে প্রতি বছরের চৈত্র মাস থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত সময়ে মা মাছ ডিম ছাড়ে। হালদা নদীর তীরবর্তী রাউজান হাটহাজারী এলাকার মৎস্যজীবি, জেলে, ডিম সংগ্রহকারীরা হালদা নদী থেকে মা মাছের ডিম সংগ্রহ করে। নদী থেকে সংগ্রহ করা ডিম নদীর তীরে মাটির কুয়ায় রেখে ও সরকার কর্তৃক নির্মিত হ্যাচারিতে ডিম থেকে রেনু উৎপাদন করে। হালদা নদীর মা মাছের ডিম থেকে উৎপাদিত রেনু দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৎস্যজীবি, মৎস্য খামারীরা ক্রয় করে নিয়ে গিলে মাছ চাষ করে পাকা হ্যাচারী গুলো অকেজো হয়ে পড়ায় মাটির কুয়ায় ডিম ফুটানো হবে। হালদা নদীতে রুই, মৃগেল, কালিবাউশ মাছ ডিম ছাড়ে বেশি। হালদা নদীর মা মাছের ডিম থেকে উৎপাদিত রেনু মাছ চাষ করে মৎস্যজীবি ও মৎস্য খামারীরা লাভবান হয় বেশি। এক সময়ে হালদা নদীতে মা মাছ প্রচুর পরিমাণ ডিম ছাড়তো। হালদা নদীর কয়েকটি বাঁক কেটে ফেলে ও হালদা নদীর সাথে সংযুক্ত রাউজানের সোনাইর খাল, কাগতিয়া খাল, মগদাই খাল, হাটহাজারীর বোয়ালিয়া খাল সহ ১২টি খালের মূখে এরশাদ সরকারের শাসন আমলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সুইস গেইট নির্মান করার পর থেকে হালদা নদীতে মাছের ডিম ছাড়ার পরিমাণ হৃাস পায়। অপরদিকে হালদা নদীর তীরে রাউজানের পশ্চিম বিনাজুরী, কাগতিয়া কাশেম নগর, আবুরখীল, কচুখাইন, হাটহাজারীর মেখল, নগরীর চাঁন্দগাও এলাকার মোহরায় কয়েকটি ইটের ভাটা গড়ে উঠেছে। ইটের ভাটায় ইট তৈরির কাজে হালদা নদীর তীরের ও জেগে উঠা চরের মাটি ব্যবহার করছে। জেগে উঠা চর ও তীরের মাটি কাটায় ব্যবহার ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন। জেগে উঠা চর ও তীর থেকে কাটা মাটি যান্ত্রিক নৌযান দিয়ে ইটের ভাটায় আনা হচ্ছে। ইটের ভাটা গুলোর জ্বালানি কাঠ ও ইট পরিবহন করছে হালদা নদী দিয়ে যান্ত্রিক নৌযান করায়। হালদা নদীর নাজির হাট থেকে কালুর ঘাট পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার দৈঘ্য নদীতে চৈত্র থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুমে যান্ত্রিক নৌযান চলাচল করার কারনে হালদা নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার পরিমাণ পুর্বের চেয়ে কমে যায়। হালদা নধীতে ১৮টি ডলফিন মারা যাওয়ার পর মৎস মন্ত্রনালয় ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, মৎস বিভাগ কঠোর নজরদারীতে রাখায় হালদা নদীতে যান্ত্রিক নৌযান চলাচল বন্দ্ব ও ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্দ্ব রাখায় এবারে মা মাছ নদীতে নিবিঘেœ ডিম ছাড়ে ।