দেশের মানুষের সহ্য ক্ষমতার প্রশংসা করলেন জেলেনস্কি

রাশিয়ার অব্যাহত হামলার মধ্যেও ইউক্রেনের মানুষ যেভাবে সব সহ্য করছে তার প্রশংসা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। মাসব্যাপী এসব হামলায় ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোর বেশিরভাগই ধ্বংস হয়ে গেছে। দেশের এক কোটি মানুষ বিদ্যুৎহীন। এরমধ্যে তাপমাত্রা শূন্যের নিচে নেমে গেছে। তারপরেও দেশের মানুষ যেভাবে ধৈর্য্য ধরে সরকারের উপরে ভরসা রেখেছে তার প্রশংসা করেছেন জেলেনস্কি।

জ্বালানি অবকাঠামোর উপর লাগাতার হামলা সত্ত্বেও ইউক্রেন দ্রুত নাগরিক পরিষেবা আবার চালু করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাজধানী কিয়েভ শহরে পানি সরবরাহ আবার চালু হয়েছে। বুধবারের হামলায় সেই পরিষেবা কার্যত পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। রাশিয়া এ দিন প্রায় ৭০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছিল। ক্রেমলিন অবশ্য এ দিন কিয়েভের উপর হামলার দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ এখনো পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হয় নি।

শহরের মেয়র ভিতালি ক্লিচকো বলেন, এক সময়ে কিয়েভের প্রায় ৭০ শতাংশ অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্কও সব জায়গায় কাজ করছে না। প্রেসিডেন্ট দপ্তরের উপ প্রধান কিরিলো টিমিশেংকো বলেন, ইউক্রেনের সব অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে কত মানুষ আবার সেই পরিষেবা পাচ্ছেন, সে বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য দেননি।
এমন বিপর্যয় সত্ত্বেও হাল ছাড়তে রাজি নয় ইউক্রেনের প্রশাসন। বৃহস্পতিবার রাতের দৈনিক ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেনের মানুষের প্রতিরোধের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আমরা মাসের পর মাস ধরে সর্বাত্মক যুদ্ধ সহ্য করে চলেছি এবং রাশিয়া আমাদের মনোবল ভাঙার কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছে না, ভবিষ্যতেও পাবে না। বুধবারের হামলার পর বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ আবার চালু করা কঠিন হচ্ছে বলে জেলেনস্কি স্বীকার করেন। তার মতে, রাশিয়া পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে এমন আচরণ করছে।

এদিকে ডয়চে ভেলের খবরে জানানো হয়েছে, রুশ প্রশাসনও ইউক্রেনীয়দের সাধারণ মানুষের দুর্দশা স্বীকার করেছে। তারা বলছে, ইউক্রেন সরকার রাশিয়ার দাবি মেনে নিলেই এই হামলা বন্ধ করা সম্ভব। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেস্কভ অবশ্য সেইসঙ্গে দাবি করেন, রাশিয়া মোটেই কোনো ‘সামাজিক স্থাপনা’-র উপর হামলা চালায় নি, ভবিষ্যতেও চালাবে না।

জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, আলোচনার ‘বাস্তবসম্মত সুযোগ’ আসা পর্যন্ত তার দেশ ইউক্রেনের সামরিক ক্ষমতা ধ্বংস করে যাবে। ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্র ভরে দেওয়া এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক জয়ের কুমন্ত্রণার জবাব দিতেই রাশিয়া সে দেশের অবকাঠামোর উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধক্ষেত্রেও উত্তেজনা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। খেরসন থেকে সেনা প্রত্যাহার করলেও সেই এলাকার উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার গোলাবর্ষণের ফলে কমপক্ষে সাত জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছে। খারকিভ অঞ্চলের পূর্বাংশে রাশিয়া সীমান্তের কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।