রেকর্ড গড়া জয় স্পেনের

টিকিটাকা পাসিং ফুটবল খেলাটা তাদের পছন্দ। এবার কোচ লুইস এনরিকে দলে যোগ করেছেন দ্রুত লং পাসে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার মিশ্র কৌশল। আর বিশ্বকাপের অন্যতম তরুণ দল স্পেনের শুরুটা হলো উড়ন্ত জয়ে। গতকাল কোস্টারিকাকে ৭-০ গোলে হারায় ২০১০’র চ্যাম্পিয়নরা। বিশ্বকাপে এটি স্পেনের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। এর আগে সবচেয়ে বড় জয় ছিলো বুলগেরিয়ার বিপক্ষে। ১৯৯৮ সালে ৬-১ গোলের জিতেছিলো স্পেন। গতকাল ম্যাচে গোল করেন স্পেনের পৃথক ছয় খেলোয়াড়। এদিন জোড়া গোল পান চলতি বছর ম্যানচেস্টার সিটি থেকে বার্সেলোনায় যোগ দেয়া ফরোয়ার্ড ফেরান তোরেস। দোহার আল থুমামা স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় ‘লা রোহা’ খ্যাত দলটি।

আর ম্যাচের অর্ধেক পথে তারা গড়ে অনন্য এক রেকর্ড। প্রথমার্ধে মোট ৫৩৭টি পাস আদান-প্রদান করে স্প্যানিয়ার্ডরা। বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচের প্রথমার্ধে ৫০০ পাস লেনদেনের প্রথম নজির এটি (১৯৬৬ সাল থেকে)। আর পুরো ম্যাচে ৮২% বলদখল রাখা স্প্যানিয়ার্ডরা দেয়া-নেয়া করে ১০৪৩টি পাস।
ম্যাচের ১২তম মিনিটে দানি ওলমোর গোলে এগিয়ে যায় স্পেন। ২১তম মিনিটে গোল করেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা মার্কো আসেনসিও। ৩১তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে এক গোল এবং ৫৪তম মিনিটে ক্ষিপ্র দক্ষতায় নিজের দ্বিতীয় গোল আদায় করেন তোরেস। তিন মিনিট পরই তোরেসকে তুলে অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতাকে মাঠে নামান কোচ এনরিকে। ম্যাচের ৭৪তম মিনিটে মোরাতার ক্রসে স্পেনের পঞ্চম গোল আসে তরুণ তারকা গাভির চমৎকার এক ভলি থেকে। এতে অনন্য এক রেকর্ডে নাম ওঠে গাভির। বিশ্বকাপে স্পেনের সবচেয়ে কমবয়সী ফুটবলার হিসেবে গোল পেলেন ১৮ বছরের গাভি। শেষ মিনিটে গোল করেন পিএসজি তারকা কার্লোস সোলের। আর ম্যাচের যোগ করা সময়ে নিজেও এক গোল করেন মোরাতা।
কাতার বিশ্বকাপে সবচেয়ে তরুণ একাদশ ঘানার। পুরো স্কোয়াডের গড় বয়স ২৫.২ বছর। দুই নম্বরে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলারদের গড় বয়স ২৫.৫। এরপর স্পেন। স্কোয়াডের ছয় খেলোয়াড়ের বয়স ২০ কিংবা তার চেয়েও কম। সবমিলিয়ে গড় বয়স ২৬।
চার বছর আগে স্বাগতিক রাশিয়ার কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায় স্পেন। ওই আসরে খেলা আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, জেরার্ড পিকে, ডেভিড সিলভা অবসরে চলে গেছেন। সার্জিও রামোস সুযোগ পাননি স্কোয়াডে। আর স্পেনের বিশ্বকাপজয়ী ২০১০ একাদশের একমাত্র সাক্ষী হিসেবে কাতারের মাটিতে পা রেখেছেন সার্জিও বুসকেটস। দলে সিজার আসপিলিকুয়েতা, বুসকেটস এবং জর্দি আলবার বয়স ৩৪-এর বেশি। আর এবারের প্রথম ম্যাচেই স্পেন দেখালো তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার মিশেলে কতটা ভয়ঙ্কর দল তারা। ২০১০ বিশ্বকাপ জয়ের পথে সাত ম্যাচে ৮ গোল করেছিল স্পেন। এবার প্রথম ম্যাচেই করলো গুনে গুনে ৭ গোল।
এর আগে তিনবার মুখোমুখি হয়েছিল স্পেন-কোস্টারিকা। তিনবারই প্রীতি ম্যাচে। ২০১১তে প্রথম সাক্ষাত শেষ হয় ২-২ সমতায়। ২০১৫তে দ্বিতীয় দেখায় স্পেন জিতেছিল ২-১ গোলে। আর সবশেষ ২০১৭ সালে ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয় কোস্টারিকা। এবার তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হারের রেকর্ড তাজা হলো। ১৯৭৫ সালে মেক্সিকো সিটিতে স্বাগতিকদের কাছে ৭-০ গোলে হেরেছিল তারা। ২৭শে নভেম্বর বাঁচা-মরার ম্যাচে স্পেনের মুখোমুখি হবে জার্মানি। একই দিনে জাপানের বিপক্ষে অস্তিত্বের লড়াই কোস্টারিকার।