যে কারণে সবার সামনে জাস্টিন ট্রুডোকে শাসালেন শি জিনপিং

ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ সম্মেলন ঘিরে নতুন বিতর্ক তৈরি হল। সম্মেলন মঞ্চের পাশে দাঁড়িয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে শাসাতে দেখা যায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে। মুহূর্তেই সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় এবং আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে। কিন্তু ট্রুডোর প্রতি শি জিনপিং-এর এই ক্ষোভের কারণ কী?

বিবিসি জানিয়েছে, মূলত কানাডার সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শি জিনপিং। এর আগে জি-২০ সম্মেলন চলাকালীন মঙ্গলবার কানাডার জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে দেখা হয় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের। তবে ওই আলোচনার বিষয়বস্তু কানাডার গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করে দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট। আর এ নিয়েই তিনি ট্রুডোকে শাসিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ট্রুডোকে চীনা প্রেসিডেন্ট বলছেন- ‘কাজটি ঠিক হয়নি’।

একজন ইংরেজি অনুবাদক নিয়ে ট্রুডোর সঙ্গে কথা বলেছেন শি। তিনি ট্রুডোকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা যা নিয়ে কথা বলেছি তার সবকিছু মিডিয়ায় প্রকাশ হয়েছে। এটি ঠিক নয়।

এভাবে কুটনীতি হয় না। এদিকে শি জিনপিং-এর ক্ষোভের পাল্টা জবাবও দিয়েছেন ট্রুডো। বলেন, আমাদের মধ্যে মতানৈক্য থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের একসঙ্গে কাজ করা উচিত। কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা স্বাধীন ও খোলামেলা আলোচনায় বিশ্বাসী এবং এটি আমরা করে যাব। আমরা দৃঢ়ভাবে একসঙ্গে কাজ করে যাব। কিন্তু এরমধ্যে কিছু থাকবে যা নিয়ে আমাদের মধ্যে মতানৈক্য থাকবে এবং এ নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তবে ট্রুডোকে থামিয়ে দিয়ে শি বলতে শুরু করেন, আগে ওরকম একটি পরিবেশ তৈরি করুন।
প্রসঙ্গত, ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ ভুক্ত দেশগুলির সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর। প্রায় ১০ মিনিটের বেশি সময় ধরে দুই শীর্ষনেতার মধ্যে বৈঠক চলে। গত তিন বছরে এই প্রথম ট্রুডো-জিনপিং-এর মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো। জিনপিং-এর সঙ্গে এই বৈঠকে চীনের আগ্রাসন নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন ট্রুডো। শুধু তাই নয়, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান, উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়েও ট্রুডো তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। এসব কথা গণমাধ্যমে প্রকাশ করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন শি জিনপিং।

যদিও চলে যাওয়ার আগে ট্রুডোর সঙ্গে হাত মেলাতে ভুলেননি শি জিনপিং। দ্যা গার্ডিয়ানকে কানাডার অটোয়ার কার্লেটন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক প্রফেসর স্টেফেন কারভিন বলেন, ট্রুডো কানাডা সংবাদমাধ্যমগুলোকে যেভাবে বৈঠকের আলোচিত বিষয় সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছেন এটি ভালোভাবে নেননি শি। তাই ট্রুডোকে পেয়ে আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছেন। দিন শেষে কানাডা যেহেতু ইউরোপ বা আমেরিকা না, সেহেতু কানাডার ওপর প্রকাশ্যে আগ্রাসী মনোভাব দেখাতে পেরেছেন শি জিনপিং।