করোনার প্রকোপ কমে আসলেও নগরবাসীর জন্য নতুন আতঙ্কের নাম ডেঙ্গু। প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
গত এক মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে সাড়ে ১৮শ জন। মশক নিধনে সিটি করপোরেশনের কার্যকর কোনো উদ্যোগ না থাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে বলে দাবি নগরবাসীর।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, অক্টোবর মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৮৬১ জন। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৫৬ জন চট্টগ্রাম নগর এলাকার বাসিন্দা। যা চলতি মাসের মোট সংক্রমণের ৭২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এ ছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৫০৫ জন। যা চলতি মাসের মোট আক্রান্তে ২৭ দশমিক ১৩ শতাংশ।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ বছর জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে মাত্র ৯ জন। ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্তের সংখ্যা আরও কমে দাঁড়ায় ৪ জন। এপ্রিলে ডেঙ্গুতে ১ জন আক্রান্ত হলেও মে মাসে পাওয়া যায়নি কোনো রোগী। তবে জুন মাস থেকে আবারও বাড়তে শুরু করে আক্রান্তের সংখ্যা। এ মাসে আক্রান্ত হয় ১৯ জন। এ ছাড়া জুলাই মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত বেড়ে ৬৪ জন, আগস্ট মাসে ১১৪ জন এবং সেপ্টেম্বর মাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৬০১ জন। এ বছর মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৬৭৬ জন। এর মধ্যে নগর এলাকায় আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৯৫৯ জন। যা মোট আক্রান্তের ৭৩ দশমিক ২০ শতাংশ। এ ছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৭১৭ জন। যা মোট আক্রান্তের ২৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের।
স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বাড়লেও জনসংখ্যা অনুপাতে আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম। তাই এখনই ভীতি ছড়ানোর মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে অবশ্যই সচেতন থাকার পরামর্শ তাদের।
মশক নিধনে সিটি করপোরেশনে কোনো দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই অভিযোগ করে জয়নাল আবেদীন নামে কাট্টলী এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, সন্ধ্যা হলে ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। মশার উৎপাত এতই বেড়েছে যে মশারি ছাড়া থাকায় দায়। আগে সিটি করপোরেশন থেকে মশার ওষুধ ছিটানো হলেও গত কয়ক বছর ধরে এমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। সিটি করপোরেশন এলাকায় থাকছি কিন্তু নাগরিক ন্যূনতম সুবিধাটুকুও নেই। মৌসুম ভেদে বিভিন্ন রোগ ছড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু রোগগুলো নিয়ন্ত্রণে এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে জনপ্রতিনিধিদের কোনো উদ্যোগ নেই।
চট্টগ্রামে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, সবার আগে সচেতনতা প্রয়োজন। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে আরও যত্নবান হওয়া জরুরি। যেকোনো সময় ঘুমাতে গেলে অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে ঘুমাতে হবে। আর কোনো লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে। এ রোগ মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া নগরের হাসপাতালগুলোতেও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে।









