ইউক্রেনে আবারও বড় ধরনের মিসাইল ও ড্রোন হামলা শুরু করেছে রাশিয়া

ইউক্রেনে আবারও বড় ধরণের হামলা চালাতে শুরু করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, সেদেশের বিদ্যুতের স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে বড় ধরনের হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। এবার সারা দেশজুড়ে বিশাল আকারে হামলা শুরু করা হয়েছে। ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চল ছাড়াও পশ্চিম, দক্ষিণ ও পূর্বের অঞ্চলগুলোতে রাশিয়া হামলা চালাচ্ছে। এর ফলে সেদেশের প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে জানানো হয়, ইউক্রেন রাশিয়ার বেশিরভাগ মিসাইল ও ড্রোন আকাশেই ধ্বংস করে দেয়ার দাবি করেছে। পাশাপাশি রাশিয়ার এই হামলার কারণে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর যুদ্ধ জয় বাধাগ্রস্থ হবে না বলেও জানিয়েছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, এখনো আমাদের কাছে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন শতভাগ ঠেকানোর মতো প্রযুক্তিগত সক্ষমতা নেই। আমি নিশ্চিত, মিত্রদের সহযোগিতায় আস্তে আস্তে সেই ক্ষমতা আমাদের হবে।
এদিকে ইউক্রেনের জাতীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ কর্তৃপক্ষ ইউক্রেনারগো জানিয়েছে, আগের মাসে রাশিয়ার বোমা হামলায় বিদ্যুৎ অবকাঠামোর যতটা ক্ষতি হয়েছিল, এবার তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছি আমরা। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, শনিবার ৩৬টির বেশি রকেট নিক্ষেপ করেছে রাশিয়া, যদিও তার বেশিরভাগই ঠেকিয়ে দেয়া হয়েছে।

পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লাভিভের ডেপুটি মেয়র সের্হাই কিরাল জানান, রাশিয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে শীতকালের আগেই ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করে দেয়া এবং যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরেও যুদ্ধ ছড়িয়ে দেয়া। ইউক্রেনের সৈন্যরা যুদ্ধক্ষেত্রে যত বেশি সাফল্য পাচ্ছে, ঘরবাড়িতে থাকা সাধারণ মানুষজনের জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠছে। কারণ বেসামরিক মানুষজনকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য রাশিয়া সবকিছুই করছে। সেই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো লক্ষ্য করে হামলা করছে।
শুক্রবার জেলেনস্কি দাবি করেছেন, সেদেশের খেরসন অঞ্চলের হাইড্রোইলেকট্রিক একটি বাঁধে মাইন স্থাপনের পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। ওই বাঁধ এখন মস্কোর সৈন্যদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কাখোভকা নামের ওই বাঁধটি ধ্বংস করা হলে লাখ লাখ মানুষ বন্যার ঝুঁকিতে পড়বে। তবে বাঁধ ধ্বংসের পরিকল্পনা নাকচ করে রাশিয়া বলছে, বরং ইউক্রেন সেটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে। খেরসন অঞ্চলে যেসব এলাকা এখন আংশিকভাবে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, সেসব এলাকায় চলাচলের জন্য এই বাঁধটি রাশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দানিপ্রো নদীর ওপর এই বাঁধটি রয়েছে।
গত কিছুদিনে যুদ্ধের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার কারণে খেরসন শহর ছেড়েছে হাজার হাজার মানুষ। রাশিয়া খেরসনের বাসিন্দাদের জীবন বাঁচাতে তাদেরকে সরিয়ে নিচ্ছে। ইউক্রেনের সৈন্যবাহিনী জানিয়েছে, শনিবার খেরসন এলাকার আরও দুটি গ্রামের দখল ছেড়ে চলে গিয়েছে রাশিয়ার সৈন্যরা। তবে এই দাবি নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এদিকে সীমান্তবর্তী বেলগোরোদ অঞ্চলের স্থানীয় গভর্নর জানিয়েছেন, ইউক্রেনের বোমায় সেখানে দুজন নিহত হয়েছে।