উন্নত দেশগুলোর অনেক প্রতিশ্রুতি পাই কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন: প্রধানমন্ত্রী

জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সহযোগিতা না পাওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ কোনো রকম ইমিশন করে না। বাংলাদেশ ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু বাংলাদেশ সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। উন্নত দেশগুলো উন্নয়ন করে ফেলেছে। আর তার ফলে আজকে আমরা ভুক্তভোগী। আমাদের এটাই দাবি ছিল, যেসব ক্ষতিগ্রস্ত দেশ; জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যেসব দেশ সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এদের সব রকমের সহযোগিতা তাদের দেওয়ার কথা।

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো আমরা তো অনেক প্রতিশ্রুতি পাই কিন্তু বাস্তবে কতটুকু সহযোগিতা পাওয়া যায়! তারপরও আমি বলবো, প্যারিস চুক্তি হওয়ার ফলে একটা আশার প্রদীপ জ্বেলে আছে। পাশাপাশি গ্লাসগোতেও কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে, ভবিষ্যতে কী হয়…। আমাদের দেশের ভৌগলিক অবস্থার কথা চিন্তা করে আমাদের ব্যবস্থাটা নিজেদেরই করে নিতে হবে।

পরিবেশ রক্ষায় নানামুখী উদ্যোগ নেওয়ার জন্য এ সময় সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, বন্যা আমাদের প্রয়োজন। সারা বছর বৃষ্টিতে যে ভূমি ক্ষয় হয়, বন্যায় পলি পড়ে সেই ভূমি আবার পুনরুদ্ধার হয়। কিন্তু এই বন্যায় মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকেও আমরা সতর্ক। সে জন্য বন্যাপ্রবণ এলাকায় আমরা এখন বন্যা ও সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করে দিচ্ছি।

ভবিষ্যতে দায়িত্বহীন কেউ যেন ক্ষমতায় না আসে সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ সহনশীল দেশ হিসেবে আজ বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ স্থান পেয়েছে। যতই দুর্যোগ আসুক আমরা সেটা মোকাবিলা করতে সক্ষম। এটা আমরা প্রমাণ করেছি। এটা অব্যাহত রাখতে হবে। আবার ও রকম কেউ যেন ক্ষমতায় না আসে, ‘যত মানুষ মারা যাওয়ার কথা ছিল তত মানুষ মরে নাই’ এ কথা বলে দায়-দায়িত্বহীনতার পরিচয় যেন কেউ না দেয়। ভবিষ্যতে সেদিকেও দেশবাসীকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমাদের বাংলাদেশটা একটা অদ্ভুত দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন মোকাবিলা করতে হয় আবার অগ্নিসন্ত্রাসের মতো দুর্যোগও আমাদের মোকাবিলা করতে হয়। যেটা মানুষ সৃষ্ট। চলন্ত গাড়িতে আগুন, বাসে আগুন, লঞ্চে আগুন। এটাই হলো আমাদের দুর্ভাগ্য।

প্রধানমন্ত্রী ভার্চ্যুয়ালি ২৫টি জেলা ত্রাণ/গুদাম/দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র, ৫০টি মুজিব কেল্লা এবং ৮০টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র উদ্বোধন করেন।