লেজারের সাহায্যে মক্কার আকাশে কোরআনের প্রথম আয়াত

সৌদি আরবের মক্কা নগরীর হেরা পর্বতে লেজার লাইটের মাধ্যমে স্থাপন করা হয়েছে পৃথিবীতে নাজিল হওয়া কোরআনের প্রথম আয়াত। মুসলিমরা বিশ্বাস করেন, হেরা পর্বতের গুহায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.)-এর ওপর নাজিল হওয়া প্রথম আয়াত ছিল এটি। লেজারটি জাবাল আল-নূর পাহাড়ের উপর স্থাপন করা হয়। এটি কাবা শরিফ থেকে ৪ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এবং হেরা গুহার সামনাসামনি স্থাপন করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।

এ নিয়ে মক্কা ইতিহাস কেন্দ্রের পরিচালক ড. ফাওয়াজ আল-দাহাস বলেছেন, সাধারণভাবে মুসলমানদের কাছে জাবাল আল-নূরের একটি ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে এবং এটি মক্কার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ও প্রতœতাত্ত্বিক স্থান। তিনি বলেন, ইতিহাসে এটি হেরা পর্বত হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে পবিত্র কোরআনের প্রথম আয়াত নাজিলের পরে সারা পৃথিবীতে যে আলো বিচ্ছুরিত হয়েছিল তার পরিপ্রেক্ষিতে এর নামকরণ করা হয়েছে জাবাল আল-নূর বা আলোর পর্বত।

আল-দাহাস আরও বলেন, মক্কাকে বিশ্বের অন্যান্য শহর থেকে যেটি আলাদা করে তা হলো- এটি একটি উন্মুক্ত জাদুঘর। এর সমস্ত পর্বত, উপত্যকা, পাথর এবং কবরস্থানগুলো একটি অনন্য ইতিহাসের প্রতিনিধিত্ব করে, যা নবী এবং তার সম্মানিত সঙ্গীদের অমর গল্প বলে।

জাবাল আল-নূরের বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল-আজহারী বলেন, জাবাল আল-নূরে লেজার লাইটে পবিত্র কোরআনের প্রথম নাজিলকৃত আয়াতটি একটি আধ্যাত্মিক মাত্রা দিয়েছে, প্রতিপত্তি ও শ্রদ্ধা যোগ করেছে। সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ এর লক্ষ্য হলো দর্শনার্থীদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করা, বিশেষ করে মুসলিমদের জন্য ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহনকারী স্থানগুলোতে।

লেজার ডিসপ্লেটি স্থাপন করেছে সাময়া ইনভেস্টমেন্ট কোং। তারা মক্কায় দুটি সাংস্কৃতিক প্রকল্পও তৈরি করছে, সেগুলো হলো- জাবাল আল-নূরে মিউজিয়াম অফ রিভেলেশন এবং মিউজিয়াম অফ মাইগ্রেশন।

সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোর লক্ষ্য হল প্রাক-ইসলামী যুগ থেকে বর্তমান পর্যন্ত উপস্থাপনার মাধ্যমে দর্শকদের মহানবীর ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত করা।
৬৭ হাজার স্কয়ার মিটার নিয়ে ‘হেরা কালচারাল ডিস্ট্রিক্ট’ প্রতিষ্ঠায় কাজ চলছে। এর দায়িত্বে আছে রয়াল কমিশন অব মক্কা সিটি। এর অধীনে অনেক সাংস্কৃতিক এবং পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। এরমধ্যে আছে, রিভিল্যাশন গ্যালারি এবং হোলি কোরআন মিউজিয়াম। গ্যালারিগুলোতে উন্নত প্রযুক্তিগত উপস্থাপনার মাধ্যমে নবীর ঘটনা এবং কোরআনের বিভিন্ন আয়াতের বিষয়বস্তু উপস্থাপন করবে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আল-হুসাইনি মন্তব্য করেন, এই সাংস্কৃতিক প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের যেসব বিষয় এখানে সেখানে ছড়ানো-ছিটানো ছিল, সেগুলো সুসংগঠিত রূপ লাভ করবে। আমরা পুরো প্রকল্পের সমাপ্তির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, যেটি আধ্যাত্মিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করবে।