নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাই হ্যাটট্রিক শিরোপা বাংলাদেশের

বাছাইপর্বের সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডকে হারিয়েই বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। আর ফাইনালে পা রেখে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি বলেছিলেন, আর বাছাই খেলে বিশ্বকাপে যেতে চাই না। আমরা যে ভালো দল, আমরা যে উন্নতি করেছি সেটা গোটা বিশ্বকে দেখাতে চাই। নারী বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে শিরোপার হ্যাটট্রিক পূর্ণ করলো বাংলাদেশ। রোববার বাছাইয়ের ফাইনালে আয়ারল্যান্ডকে ৭ রানে হারিয়ে এবারের শিরোপা কুড়ায় নিগার সুলতানার দল। আবুধাবিতে টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহটা খুব বড় ছিল না। তবে বোলিংয়ে মুন্সিয়ানা দেখিয়ে ম্যাচ নিজেদের করে নেয় টাইগ্রেসরা। বাছাইয়ে এটি বাংলাদেশের টানা পঞ্চম জয়। গ্রুপ পর্বে আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে জয়ের পর সেমিফাইনালে হারায় থাইল্যান্ডকে।

ফাইনালে ওপেনিংয়ে নেমে দারুণ এক ফিফটি হাঁকান ফারজানা হক পিংকি। অন্যরা ভালো করতে না পারায় পুঁজি যদিও বেশি বড় হলো না।

তবে বোলাররা যথারীতি মেলে ধরলেন নিজেদের। আয়ারল্যান্ডকে আবার হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো উইমেন’স টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ। আসরের গ্রুপ পর্বেও আয়ারল্যান্ডকে হারিয়েছিল নিগারের দল।
দুই দলেরই মূল টুর্নামেন্টে খেলা নিশ্চিত হয়েছিল আগেই। আবুধাবিতে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ করে ১২০ রান। ৫৫ বলে ৭ চারে ৬১ রান করেন ফারজানা হক। দুই অঙ্কে যেতে পারেন আর কেবল রুমানা আহমেদ (২১)। জবাবে ৭ উইকেটে ৫৮ রানের নড়বড়ে অবস্থান থেকে ৯ উইকেটে ১১৩ পর্যন্ত যেতে পারে আয়ারল্যান্ড।

শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নামে টস জিতে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওভারে টানা দুটি করে চার হাঁকান ফারজানা। আরেক ওপেনার মুর্শিদা খাতুন (৬) টিকতে পারেননি। ঠিক ৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন দারুণ ফর্মে থাকা নিগার সুলতানাও। তৃতীয় উইকেটে রুমানার সঙ্গে ৪৯ রানের জুটির পথে ফারজানা ফিফটি করেন ৪৪ বলে। কিন্তু এ জুটি ভাঙার পর নিয়মিত উইকেট হারায় বাংলাদেশ। রুমানা কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়ার পর ফারজানা স্টাম্পড হয়ে সাজঘরে ফেরেন পরের ওভারে। এরপর অন্যরা যোগ দেন আসা যাওয়ার মিছিলে। শেষ ৫ ওভারে ২৯ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

রান তাড়ায় শুরু থেকেই উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। দ্বিতীয় ওভারে গ্যাবি লুইসকে বোল্ড করে দেন সানজিদা আক্তার মেঘলা। পরে তিনি বোল্ড করেন ওর্লা প্রেনডেরগাস্টকে। নাহিদা তার প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফেরান অ্যামি হান্টারকে। রুমানা নিজের পরপর তিন ওভারে তুলে নেন ৩ উইকেট। মাঝে সোহেলি আক্তারের শিকার একটি। ত্রয়োদশ ওভারে ৫৮ রনে ৭ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে অনেকটাই ছিটকে যায় আইরিশরা। এরপর শেষের ব্যাটাররা লড়াই করলেও তা যথেষ্ট হয়নি। শেষ ওভারে ১৫ রানের প্রয়োজন ছিল আইরিশদের। নাহিদার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৭ রানের বেশি নিতে পারেনি তারা। ২৪ বলে ২টি চারে সর্বোচ্চ ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন আর্লেনা কেলি।

২৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সফলতম বোলার রুমানা। সানজিদা, নাহিদা ও সোহেলি নেন ২টি করে উইকেট। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় হবে ১০ দলের নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আবুধাবিতে মাঠে বসে ফাইনাল উপভোগ করেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান ও প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী। খেলা শেষে বাংলাদেশ অধিনায়কের হাতে ট্রফি তুলে দেন বিসিবি সভাপতি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস: বাংলাদেশ নারী দল, ব্যাটিং
বাংলাদেশ নারী দল: ২০ ওভারে ১২০/৮ (মুর্শিদা ৬, ফারজানা ৬১, নিগার ৬, রুমানা ২১, মোস্তারি ৬, রিতু ৯, সালমা ৪, লতা ০, নাহিদা ৩; ডেলানি ৩/২৭, কেলি ২/১৭, মারে ২/২১,)
আয়ারল্যান্ড নারী দল: ২০ ওভারে ১১৩/৯ (কেলি ২৮*; রুমানা ৩/২৪ সানজিদা ২/১৬, সোহেলি ২/২০), নাহিদা ২/৩১।
ফল: বাংলাদেশ ৭ রানে জয়ী।