জলবায়ু সংকট মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য হুমকি: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

চীনের হাইনানে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) বার্ষিক সম্মেলন ২০২৫-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভাষণে এশিয়ার দেশগুলোকে একটি অভিন্ন ভবিষ্যৎ ও সমৃদ্ধির জন্য একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

চীন সফরের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) বার্ষিক সম্মেলন ২০২৫-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। ভাষণে তিনি বলেন,

এই পরিবর্তনশীল বিশ্বে এশিয়ার দেশগুলোর ভাগ্য একে অপরের সাথে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি অভিন্ন ভবিষ্যৎ ও সমৃদ্ধির জন্য একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে।

আর্থিক সহযোগিতার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এশিয়াকে অবশ্যই একটি টেকসই অর্থায়ন ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। আমাদের নির্ভরযোগ্য তহবিলের প্রয়োজন যা আমাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করে। তার কথায়, ‘আমাদের এমন নির্ভরযোগ্য তহবিল প্রয়োজন যা আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবে এবং আমাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করবে।’

বাণিজ্য সহযোগিতা সম্পর্কে তিনি বলেন, এশিয়া এখনও সবচেয়ে কম সংহত অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি। আমাদের অবিলম্বে বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করতে হবে।

খাদ্য ও কৃষি সহযোগিতা সম্পর্কে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এশিয়ার দেশগুলোকে সম্পদ-দক্ষ কৃষিকাজকে উৎসাহিত করতে হবে এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে এবং স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে হবে। প্রযুক্তিভিত্তিক টেকসই কৃষি সমাধান সম্প্রসারণ এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য এবং ‘জলবায়ু-স্মার্ট’ কৃষিকাজে উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ।’

প্রযুক্তি বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এশিয়াকে একটি শক্তিশালী প্রযুক্তিগত ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে, যা পুনরুদ্ধারমূলক, বিতরণমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়া উচিত।

তার কথায়, ‘আমাদের জ্ঞান ও তথ্য ভাগাভাগি করতে হবে এবং প্রযুক্তির বিকাশ ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করতে হবে। ডিজিটাল সমাধানের ক্ষেত্রে সহযোগিতা অগ্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

জলবায়ু পরিবর্তন রোধে করণীয় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই শূন্য-বর্জ্য জীবনধারার উপর ভিত্তি করে একটি প্রতি-সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে। ভোগ কেবলমাত্র প্রয়োজনীয় চাহিদার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির সামাজিক ব্যবসার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা উচিত, যা ক্রমবর্ধমানভাবে ব্যবসার ভবিষ্যত নির্ধারণকারী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে; যেখানে উদ্ভাবন, উদ্দেশ্য এবং দায়িত্ব একত্রিত হয়।’
তথ্যসূত্র: বাসস