বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে নতুন বাজার ও বৈচিত্র্য আনতে প্রথমবারের মতো ঢাকায় শুরু হলো ‘গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো ২০২৫’। দ্রুত বদলে যাওয়া বৈশ্বিক বাণিজ্য-পরিবেশে বাংলাদেশকে নতুনভাবে অবস্থান তৈরির সুযোগ এনে দেবে এই আয়োজন—এমনটাই জানিয়েছেন বাণিজ্য, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “রপ্তানি প্রবৃদ্ধিকে আরো শক্তিশালী করতে হলে পণ্য বৈচিত্র্য, সরবরাহ সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক গড়ে তোলা জরুরি।”
উপদেষ্টা বলেন, গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক, নির্মাতা, বিনিয়োগকারী ও উদ্ভাবকদের জন্য আইডিয়া বিনিময়, আলোচনা এবং দীর্ঘমেয়াদী ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব গড়ার সুযোগ তৈরি করবে।
এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি জানান, বাংলাদেশ শিগগির স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশ করছে। এই অগ্রগতি একদিকে নতুন সম্ভাবনা খুলে দিচ্ছে, অন্যদিকে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা কমে যাওয়ায় রপ্তানি খাতে নতুন চ্যালেঞ্জও তৈরি হবে।
“এই রূপান্তর সফলভাবে মোকাবিলা করতে প্রতিযোগিতামূলকতা বাড়ানো এবং রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে”-বলেন শেখ বশিরউদ্দীন। তার মতে, এই বাস্তবতায় গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো আয়োজন সময়োপযোগী এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী। স্বাগত বক্তব্য দেন এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই-এর প্রশাসক ও অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. আব্দুর রহিম খান এবং বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি সম্ভাবনাকে সামনে রেখে তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী আয়োজন করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এক্সপোতে বাংলাদেশের আটটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি খাত—তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষিপণ্য, প্লাস্টিক ও কিচেনওয়্যার, হোম ডেকর ও ফার্নিচার, ওষুধ এবং তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি)—প্রদর্শিত হচ্ছে।
এসব খাতের শতাধিক স্থানীয় প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক কম্পানি, পাইকারি ব্যবসায়ী এবং সরবরাহকারীরা অংশ নিচ্ছেন। এ ছাড়া আফগানিস্তান, চীন, জাপান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের ক্রেতা, বিনিয়োগকারী ও সোর্সিং প্রতিষ্ঠান এক্সপোতে উপস্থিত রয়েছে। তারা অনলাইন ও অফলাইন বিজনেস-টু-বিজনেস (বিটুবি) বৈঠক, পণ্য ক্রয়-বিক্রয় ও চুক্তি করার সুযোগ পাবেন।
এবারের এক্সপোতে বিষয়ভিত্তিক ১০টি বিশেষ সেমিনার, নেটওয়ার্কিং সেশন, দেড় শতাধিক স্টল, ফ্যাশন শোসহ নানা আয়োজনে তিন দিনব্যাপী জমে উঠবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক কার্যক্রম।











