সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতির বিষয়ে হাইকোর্টের রুল

চার্জশিট হওয়ার আগে সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নেওয়ার বিধান কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন।

রুলে ফৌজদারি মামলার আসামি কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোছা. সুলতানা পারভীন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার নাজিম উদ্দিনকে পদায়ন করা থেকে বিরত থাকতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং এনডিসি এস এম রাহাতুল ইসলামকে বরিশালে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পদায়ন করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন।

জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু ও ইশরাত হাসান।

সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪১ (১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেফতার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।

সংবাদ প্রকাশের জেরে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে (১৪ মার্চ) অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে বাড়ি থেকে মারধর করে তুলে নিয়ে যায় জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা। পরে তার কাছে আধা বোতল মদ ও দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা পাওয়ার অভিযোগ এনে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে মধ্যরাতেই জেলা হাজতে পাঠানো হয়।

জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেন। কিন্তু এখনও তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। এমনকি একজনকে বরিশালে পদায়ন করা হয়েছে।

পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর বলা হয়, এসব কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করার আগে অনুমতি লাগবে। তাই সরকারি চাকরি আইনের ৪১ (১) এর বিধান চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। আদালত আইনের এই ধারা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পোস্টিং নিয়ে রুল জারি করেছেন।