ঘর থেকে বাইরে পা বাড়াতে জুতা

ঘর থেকে বাইরে পা বাড়ালেই প্রয়োজন এক জোড়া জুতা। আর এই জুতা হওয়া চাই মানানসই। কারণ, বেমানান জুতা মুহূর্তেই নষ্ট করে দিতে পারে পুরো স্টাইল স্টেটমেন্ট। কথায় আছে, মানুষের ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটে তার জুতায়। সুন্দর জামাকাপড় পরে যদি এক জোড়া মানানসই জুতা না পরা হয়, তাহলে কিন্তু সব ভেস্তে যাবে। স্টাইলিস্টদের মতে, রুচি আর আধুনিকতার প্রমাণ পাওয়া যায় জুতার ব্যবহার দেখে, যা নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই সমান। পোশাকের সঙ্গে স্টাইলিশ জুতার ব্যবহার আপনাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। অনেক সময় কোন পোশাকের সঙ্গে কেমন জুতা পরতে হবে, তা অনেকেই বুঝতে পারেন না।

এদিকে বছরজুড়ে থাকে নানান উৎসব। অন্যদিকে অফিস, বাসা, পার্টি—সব জায়গায় নিজের ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানায়, এমন জুতা ব্যবহার করা উচিত।
অফিস মিটিং, কনফারেন্সের জন্য চামড়ার জুতা আদর্শ। এ ক্ষেত্রে অক্সফোর্ড শু সবচেয়ে মানানসই। কালো রঙের স্যুটের সঙ্গে কালো জুতা পরাই ভালো। তবে ধূসর বা অন্য যেকোনো রঙের স্যুটের সঙ্গে কালো ও বাদামি দুই রঙের জুতাই পরা যাবে। মেয়েদের ক্ষেত্রে কালো বা বাদামি রঙের দুই বা আড়াই ইঞ্চি উঁচু নরম চামড়ার হিল পরা উত্তম। সৃজনশীল কর্মপরিবেশে জুতা পরিধানে ছাড় পাওয়া যায়। বিশেষ করে আপনি যদি ফ্যাশন কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি বা বিজ্ঞাপন ফার্ম, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম কিংবা ট্রাভেল এজেন্সি প্রভৃতির প্রতিনিধি হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার পোশাক-পরিচ্ছদের সঙ্গে ফ্যাশনেবল জুতা ব্যক্তিত্বকে আরও গ্রহণীয় করে তুলবে। অনেক অফিসে মেয়েদের দুই ইঞ্চি হিলের সামনের দিকে সামনের দিকে খোলা বা বন্ধ পাম্প শু পরার নিয়ম থাকে। এসব জুতা শাড়ি বা স্কার্টের সঙ্গে বেশ মানায়।

আবহাওয়া অনুযায়ী জুতা
জুতা নির্বাচন করুন আবহাওয়া অনুযায়ী, যাতে জুতা কাদা ও পানিতে ভিজলেও নষ্ট না হয়। সহজে পরিষ্কার করা যায়। বর্ষায় ছেলেরা প্রয়োজনে রেইন বুট পরতে পারেন। তবে অফিসে এসে ভারী জুতা পাল্টে নিন। শীতল আবহাওয়ার জন্য, হাইনেক রাইডিং জুতা বা উলের টাইট জুতা পরতে পারেন।
অনুষ্ঠানে
বিয়ের অনুষ্ঠানে পায়জামা–পাঞ্জাবির সঙ্গে মানানসই হবে নাগরা, চটি, ফিতাওয়ালা চপ্পল। আর স্যুট কিংবা শেরওয়ানির সঙ্গে ফিতাওয়ালা জুতা ও মেকাসিনো পরতে পারেন। ছেলেরা পার্টিতে পরতে পারেন ক্যাজুয়াল শু, স্নিকার ইত্যাদি। সামনের দিকে কিছুটা বাড়ানো পয়েন্টেড রাউন্ড শেপের শুও পরতে পারেন। রঙের ক্ষেত্রে কালোকেই ফরমাল ধরা হয়। তবে পার্টিতে বাদামি বা অন্য যেকোনো রং নিতে পারেন। পার্টি বা অনানুষ্ঠানিক পরিবেশে মেয়েরা ভেলভেট ও রেশমি জুতা পরতে পারেন। তবে পোশাকের ধরন ও ব্যাগের রঙের সঙ্গে মিল রেখে জুতা নির্বাচন করা ভালো। যা–ই পরুন, খেয়াল রাখুন যাতে আপনার ব্যক্তিত্ব ও পোশাকের সঙ্গে যায়।

ভ্রমণেভ্রমণের সময় অবশ্যই স্বাচ্ছন্দ্যের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এ সময় আরামদায়ক কেডস অথবা কাপড়ের জুতা নির্বাচন করা যেতে পারে, তবে তা পরিষ্কার ও ভ্রমণোপযোগী কি না, পরখ করে নেওয়া ভালো। ভ্রমণের ধরন, সময় এবং অবস্থা বুঝে জুতা নির্বাচন করুন।

খেলাধুলার সময়খেলাধুলায় স্নিকারজাতীয় জুতা পরা ভালো। তবে খেলার ধরন অনুযায়ী জুতা নির্বাচন করতে হয়। ফুটবল খেলার সময় বুট, ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য স্নিকার, প্রাতভ্রমণের সময় জগিং শু, আবার টেনিসের জন্য টেনিস শু পরতে হবে।

আড্ডা বা ঘোরাঘুরিবন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া কিংবা প্রিয়জনকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রেও নিজের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করতে জুতার গুরুত্ব আছে। আবার আরামের দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময়ই হয়তো জিন্স আর টি-শার্ট পরা হয়। আর এর সঙ্গে আদর্শ জুতা হবে আরামদায়ক এবং মজবুত স্নিকারস। মেয়েদের ক্ষেত্রে জিন্সে ফ্ল্যাট জুতা মানিয়ে যায় বেশ। ফ্ল্যাট জুতায় স্নিকার আর ক্যানভাসের পাশাপাশি এখন ব্যালেরিনা তরুণীদের পছন্দের তালিকায় প্রথম দিকেই থাকে।স্পঞ্জ অথবা রাবারের স্লিপার সাধারণত বাসায়, ওয়াশরুম অথবা পরিচ্ছন্নতার কাজে পরা হয়। গরমের দিনে অফিসে স্যান্ডেল পরতেই হলে অনুমতি নিয়ে পরা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে মানানসই, মানসম্পন্ন লেদারের স্লিপার পরা উত্তম। তবে খেয়াল রাখতে হবে, জুতা নির্বাচন আপনার পেশাগত কাজে কোনো প্রভাব ফেলছে কি না।