প্রকৃতির সঙ্গে মিল রেখে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার আহ্বান

প্রকৃতির সঙ্গে মিল রেখে শতবর্ষী প্রবর্ত্তক সংঘের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকেলে নগরের পাঁচলাইশে প্রবর্ত্তক সংঘের নতুন ৬তলা ৫০০ ছাত্রীর আবাসিক হোস্টেল ‘মৈত্রেয়ী’ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, সমাজসেবায় অনন্য অবদান রেখেছে প্রবর্ত্তক সংঘ। সমাজের সুবিধাবঞ্চিতদের- বিশেষ করে অনাথদের জন্য মহৎ কাজ করেছে এ সংঘ।

তিনি বলেন, আমার বাবা যখন ২০১১ সালে মারা যান তখন আমি সরকারের মন্ত্রী। বাবা প্রখর রোদে ছায়া দেওয়া ছাতার মতো। পৃথিবীর যে প্রান্তে থাকতাম না কেন দিনে একবার হলেও কথা বলতাম। ৭ বছর বয়সে মা মারা যান।

চট্টগ্রামে ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংকট আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম শহরের কেন্দ্রস্থলে প্রবর্ত্তক বিদ্যাপীঠ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে যদি মান যুক্ত হয় তবে সেটি হবে শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি পাঠদানে সীমাবদ্ধ থাকে তবে মানুষ গড়া সম্ভবপর হয় না।

তিনি বলেন, জীবন আমার কাছে যুদ্ধক্ষেত্রের মতো। যুদ্ধের ময়দানে থমকে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই। অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয়। জীবনটাও তেমন। অনেক আচ্ছাদন হারিয়ে যাবে। কিন্তু অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা থাকলে আত্মকেন্দ্রিকতা পরিহার করতে হবে। আত্মিক উন্নয়ন জরুরি। যে ছেলেটি স্কুলে পড়ে তার সঠিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। মেধাবিকাশের পাশাপাশি মননশীলতার চর্চা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবার রক্তে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। পঁচাত্তরের পর রাষ্ট্রকে সাম্প্রদায়িকীকরণ করা হয়েছে। বিএনপি জামায়াত এ কাজটি করেছে। শত্রু সম্পত্তি আইন করেছিল রাষ্ট্র। আমরা হয়রানি বন্ধ করেছি। আমরা বাঙালি এটি আমাদের প্রথম পরিচয়। যারা রাষ্ট্রকে সাম্প্রদায়িক শক্তিতে ভাগ করতে চায় তাদের প্রতিহত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।সংঘের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র লালার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সম্পাদক তিনকড়ি চক্রবর্তী। বক্তব্য দেন সংঘের সহ-সভাপতি প্রফেসর রণজিৎ কুমার ধর, শুলকবহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোরশেদুল আলম।

‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’ গানের সঙ্গে ফলক উন্মোচন করে নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী।

ঋষি অরবিন্দ ও মতিলাল রায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বঙ্কিম চন্দ্র সেন, হেম চন্দ্র রক্ষিত, বীরেন্দ্র লাল চৌধুরী প্রমুখ ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে প্রবর্ত্তক সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫০ সালের ৪ অক্টোবর ২০০ ছাত্রীর প্রথম আবাসিক হোস্টেলের ভিত্তি স্থাপন করেন নেলী সেনগুপ্তা।