বিব্রতকর অবস্থা বলে বর্ণনা করেছেন জো বাইডেন

নির্বাচনে হেরে পরাজয় স্বীকারে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের পরাজয় মেনে নিতে অস্বীকৃতিকে বিব্রতকর অবস্থা বলে বর্ণনা করেছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেন। রিপাবলিকান সাবেক প্রেসিডেন্ট ডব্লিউ বুশসহ বিশ্ব নেতারা বাইডেনকে তার বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা দিলেও ট্রাম্প মানতে রাজি নন। তিনি উল্টো আইনি চ্যালেঞ্জের পথে হাঁটছেন। সর্বশেষ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের জন্য এটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার তার কেন্দ্রীয় আইনজীবিদের নির্দেশ দিয়েছেন। ওদিকে প্রথাগত নিয়ম অনুযায়ী আগামী ২০শে জানুয়ারি নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বাইডেনের হাতে ক্ষমতা বুঝে দেয়ার কথা ট্রাম্পের। কিন্তু তিনি এখনও পরাজয় মেনে নেন নি। এক্ষেত্রে নতুন এক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এ অবস্থায় নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মনে করছেন কোনো কিছুই ক্ষমতা হস্তান্তরকে থামাতে পারবে না।

পক্ষান্তরে ট্রাম্প টুইট করে বলছেন, তিনিই জয়ী। তবে সব বড় বড় টিভি নেটওয়ার্ক তিনি পরাজিত বলে খবর প্রচার করেছে। এখনও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোনো নির্বাচনী ফল ঘোষণা করা হয়নি। যে ফল ঘোষণা করা হয়েছে তা মার্কিন মিডিয়ার। এখনও অনেক ভোট গণনা চলছে। ফলে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল আগামী ১৪ই ডিসেম্বর ঘোষণা করার কথা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।
এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতির বিষয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেনের কাছে মঙ্গলবার জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা। দেলাওয়ারের উইলমিংটনে তিনি জবাবে সাংবাদিকদের বলেছেন, খোলাখুলি বলছি- এ এক বিব্রতকর ব্যাপার। আমার মনে হয়, এটা প্রেসিডেন্টের ‘লিগ্যাসির’ জন্য সহায়ক হবে না। দিনশেষে আপনি জানেন ব্যাপারটার সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে ২০ শে জানুয়ারি।
এরই মধ্যে ক্ষমতা বুঝে নেয়ার জন্য তিনি যখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখন একের পর এক বিদেশি নেতারা তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন টেলিফোনে। তাকে অভিনন্দন জানিয়ে ফোন করেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, আইরিস প্রধানমন্ত্রী তোইসেচ মাইকেল মার্টিন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন এবং জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল।
তবে বাইডেন যত যা-ই বলুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কিন্তু তার টুইট অব্যাহত রেখেছেন। তিনি মঙ্গলবারও বেশ কিছু টুইট করেছেন। তাতে তিনি ইংরেজি বড় হাতের অক্ষরে লিখেছেন ব্যালট গণনায় বড় রকমের অনিয়ম হয়েছে। আমিই জিতবো। তবে তার এসব টুইটকে সামাজিক নেটওয়ার্কগুলো আপত্তিকর বলে লেবেল লাগিয়ে দিয়েছে। তিনি অপ্রমাণিত অভিযোগ দাঁড় করিয়ে যাচ্ছেন। তিনি দাবি করছেন বাইডেন শুধু নির্বাচনে দুর্নীতির মাধ্যমেই জিততে পারেন। অন্যদিকে ট্রাম্পের অনুগত তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, যখনই প্রতিটি বৈধ ভোট গণনা করা হবে তখনই দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন শুরু হবে। একই রকমভাবে রিপাবলিকান অনেক নেতাই বাইডেনের জয় মানতে রাজি নন। মঙ্গলবার উইসকনসিনের রিপাবলিকান সিনেটর রন জনসনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি কেন ডেমোক্রেটদের অভিনন্দন জানান নি। জবাবে তিনি বলেছেন, তাকে অভিনন্দন জানানোর কিছুই ঘটেনি। মিসৌরির সিনেটর রয় ব্লান্ট বলেছেন, ট্রাম্প মোটেও পরাজিত হতে পারেন না। অন্যদিকে সিনেটে রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককলেন বলেছেন, নির্বাচনের ফল নিয়ে আইনগত চ্যালেঞ্জ জানাতে রিপাবলিকানদের সব রকম অধিকার আছে।