শেষ ফরাসি জিম্মি মারয়ামকে স্বাগত জানান ম্যাক্রোঁ

বিশ্বের শেষ ফরাসি জিম্মি হিসেবে মুক্তি পেয়েছেন ৭৫ বছর বয়সী মারয়াম বা সোফি পেটরোনিন।

গতকাল শুক্রবার (৯ অক্টোবর) পেরিসের একটি বিমানবন্দরে হিজার পরিধান করে অবতরণ করলে পেটরোনিনকে স্বাগত জানাতে আসেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।

আফ্রিকার মালিতের দীর্ঘ চার বছর জিম্মি অবস্থায় কাটানোর পর দেশে ফেরেন মারয়াম। জিম্মি থাকাকালে তিনি ইসলাম গ্রহণ করে সোফি থেকে মারয়াম নাম ধারণ করেন। মারয়ামের পাশাপাশি দুজন ইতালি নাগরিক ও মালির রাজনৈতিক কর্মী সোমাইলা সিসি জিম্মি অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে ফিরে আসেন।

মারয়ামের দেশে ফেরার ঘটনার পাশাপাশি তাঁর হিজাব পরিধানের দৃশ্যও ব্যাপক ঝড় তৈরি করে ফ্রান্সে। তাঁর ইসলাম গ্রহণ নিয়ে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে তৈরি হয় অনেক তর্ক-বিতর্ক।

ফরাসি পত্রিকা ‘লেফিগারো’ এক খবরে বলে, ‘মারয়ামকে ধারণ করা বিমানটি পেরিসে এসে পৌঁছেছে। তাতে একজন চিকিৎসক, তাঁর পুত্র ও কয়েকজন কূটনৈতিক কর্মকর্তা আছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট তাঁকে সম্ভাষন জানাতে আসেন।’

৭৫ বছর বয়সী ফরাসি জিম্মি মারয়ামের প্যারিসে পৌঁছার দৃশ্য সম্বলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে মারয়ামকে পরিবারের সঙ্গে আলিঙ্গণের আগে প্রথমে ম্যাক্রোঁর সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়।

মারয়ামের ফেরত আসা নিয়ে ফ্রান্সের কট্টর ডানপন্থী নেতা জোন মেরি লুবিন প্রশ্ন তুলেন। ফরাসি জিম্মি মুক্তি বিষয়ে মালির সঙ্গে ম্যাক্রোঁর চুক্তির কথা বলে ‘এর বদলে একজন জিহাদির মুক্তি মেলা’র দিকে ইঙ্গিত করেন ডানপন্থী নেতা।

এদিকে ফরাসি জিম্মি মারয়াম মালির গণমাধ্যমকে নিজের ইসলাম গ্রহণের কথা সুস্পষ্ট ভাষায় জানান। ‘মালি ও সেখানকার সবার জন্য দোয়া করেন বলে জানান তিনি। সোফির বদলে তাঁর নাম থেকে মারয়াম।’ তিনি আরো বলেন, মালির কারণে আমি নামাজ পড়ি। আমি আল্লাহর কাছে করুণা প্রত্যাশী। কারণ আমি একজন মুসলিম নারী। আগের সোফি এখন আপনার সামনে মারয়াম হয়েছেন।’

অবশ্য গণমাধ্যমের সামনে নিজের ইসলাম গ্রহণের কথা বলায় ফরাসি কট্টরপন্থী দলের গণমাধ্যমের কাছে তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয় মারয়ামকে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো তাঁকে ‘ফরাসি ভূমিতে নতুনকরে ইসলামের আগমন’ বলে আখ্যায়িত করে।

উল্লেখ্য, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ সালে মালির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গায়োতে বন্দুকধারী হাতে অপহৃত হন মারয়াম। শহরের শিশুদের নিয়ে কাজ করা একটি সেবাপ্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন।