২০২২ সালের মধ্যে ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হবে বলে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী জাপান সরকারের দাতা সংস্থা জাইকা জানিয়েছে।আর ঢাকায় গণপরিবহনের উন্নয়নে গৃহীত মাস র্যাপিড ট্রানজিট-এমআরটির সব প্রকল্প ২০২৮ সালের মধ্যে শেষ হবে বলে তাদের ভাষ্য।
জাইকার আবাসিক প্রতিনিধি হিতোশি হিরাতাসহ তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এই তথ্য দেয়।
নিজের দপ্তরে ওই বৈঠকের পর পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “জাইকা প্রতিনিধির কাছে এমআরটি-৬ সম্পর্কে জানার আগ্রহ ছিল। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, এমআরটি-৬ মেট্রোরেল প্রকল্পটি ২০২২ এর মধ্যে শেষ হবে। আর শেষটা অর্থাৎ এমআরটির শেষ প্রকল্পটি ২০২৮ সালের মধ্যে শেষ হবে।”
ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থা উন্নয়নে এমআরটির ছয়টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে এমআরটি-৬ এ উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময় ধরা হলেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পরে তা এগিয়ে আনা হয় বলে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন।
এই প্রকল্পের প্রথম ধাপ উত্তরা থেকে আগারগাঁওয়ে এ বছরের শেষ নাগাদ ট্রেন চালুর আশা প্রকাশ করছেন সরকারের কর্মকর্তারা। দ্বিতীয় ধাপ আগারগাঁও থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে গত অক্টোবরে বলেছিলেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “মাঝখানে হলি আর্টিজান দুর্ঘটনার কারণে জাপানের অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর কিছুটা ক্ষতি হয়েছিল।
“আমি তাদের কাছে জানতে চেয়েছি, এখন তাদের নিরাপত্তার কোনো সমস্যা আছে কি না? তারা আমাকে বলেছেন, যা হওয়ার হয়ে গেছে তবে এখন কোনো সমস্যা নেই। বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে তারা সন্তুষ্ট।
২০১৬ সালের জুলাইয়ে গুলশানের হলি আর্টিজান ক্যাফেতে জঙ্গি হামলায় নিহতদের মধ্যে সাতজন ছিলেন জাপানি। তারা জাইকার একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করছিলেন। এদের মধ্যে ছয়জন ছিলেন মেট্রোরেল প্রকল্পের সমীক্ষক।
জাপানের অর্থায়নে চলমান মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অন্যান্য প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন ‘ঠিকঠাক’ মতো এগোচ্ছে বলে জানিয়েছে জাইকার প্রতিনিধি দল।
এমএ মান্নান বলেন, “গতি ভালোই আছে। সময়মতোই সকল প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে তারা (জাইকা) আশাবাদী।”
তিনি বলেন, “ঢাকার কাছে আড়াই হাজারে জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ করা হচ্ছে। ওইটার বিষয়ে তাদের আগ্রহ বেশি। এছাড়াও জ্বালানি খাতেও তারা বিনিয়োগে আগ্রহী।”
ওই অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপানি ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করবে বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, “তারা আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন। যেমন আমাদের পরিকল্পনা কমিশনে যেখানে প্রকল্পের ডিপিপির কার্য়ক্রম পরিচালনা করা হয় তাতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে বলে তারা মনে করেন।”
এক্ষেত্রে প্রকল্পে অনুমোদন প্রক্রিয়া আরও দ্রুত করার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে জাইকা।
জাপান এদেশে আরও সহায়তার পরিমাণ আরও বাড়াবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছে জাইকার এই প্রতিনিধি দল।