মহেশখালীতে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

হোবাইব সজীব :
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নে প্রকল্পের বরাদ্দ না থাকলেও ঘর দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেক অতি দরিদ্র মানুষ টাকা দিলেই মিলবে ঘর- এই আশায় দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা ঋণ নিয়ে স্থানীয় মেম্বার শরীফকে ঘুষ হিসেবে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ইউনিয়নের মেম্বার শরীফ বিরুদ্ধে ঘর দেওয়ার নাম করে লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে আগামীতে এই ইউনিয়নে প্রকল্প আসবে কি-না তা কেউ জানে না।

‘জমি আছে ঘর নেই’- এই আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর আওতায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অর্থায়নে তৃণমূল পর্যায়ের জমি আছে অথচ ঘর নির্মাণ করতে পারছে না, এমন অতি দরিদ্র পরিবারের জন্য বিনামূল্যে সরকার ঘর তৈরি করে দিচ্ছে। উপজেলা প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, আর এই প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ঘর নির্মাণের কাজের প্রকল্প নাই বর্তমানে। অথচ প্রকল্প এখনও না এলেও আগামীতে আসবে এই কথা বলে উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শরীফ অতি দরিদ্র মানুষকে একটি করে ঘর দেওয়ার নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৮ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হিসেবে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কালারমারছড়া ছামিরা ঘোনা গ্রামের রেহানা বেগম বলেন, কালারমারছড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার শরীফ আমাকে ঘর দেওয়ার কথা বলে ১৮ হাজার টাকা নিয়েছে। আমি এখনও কোনো ঘর পাইনি। ছামিরা ঘোনা গ্রামে মরিয়ম বলেন, ঘর পেতে শরীফ মেম্বারকে আমি ১৫ হাজার টাকা নিয়ে দিয়েছি। কিন্তু আমি এখনও ঘর পাইনি।

ইতিমধ্যে এই প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগের ২টি ভিডিও চিত্র হাতে আসে। ভিডিওতে দেখা যায়, গেলো কয়েকমাস আগে উপজেলার কালারামারছড়া ৮নং ওয়ার্ড ফকিরা ঘোনা গ্রামের ভুক্তভোগী ২ মহিলার কাছ থেকে নয় ছয় করে প্রায় ৩৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলেন, হাতে আসা ২য় ভিডিওতে আরো একজন থেকে অগ্রিম বাবদ ১০ হাজার হাতে গুনার চিত্রও দেখা যায়। ইউনিয়নের ফকিরাঘোনা গ্রামের ভুক্তভোগী ২ মহিলা অভিযোগ করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অগ্রাধিকার প্রকল্প থেকে বাড়ি দেওয়ার কথা বলে প্রতিজন থেকে ২০ হাজার টাকা করে চুক্তি করে। পরে অগ্রিম বাবদ একজন থেকে ১৮ হাজার এবং অপরজন থেকে ১৫ হাজার টাকা অগ্রিম নেয়। কিন্তু অগ্রিম দেওয়ার ৭-৮ মাস পেরিয়ে গেলেও ঘর না পাওয়ায় ভুক্তভোগীরা স্থানীয় সামাজিক ব্যক্তিদের কাছে বিষয়টি বুঝানোর জন্য গেলে একজন সেই অভিযোগ ভিডিও ধারন করে রাখে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ‘জমি আছে ঘর নেই’এই আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অর্থায়নে তৃনমূল পর্যায়ের জমি আছে অথচ ঘর নির্মাণ করতে পারছে না এমন অসহায় অতিদরিদ্র পরিবারদের জন্য বিনামূল্যে সরকার ঘর তৈরি করে দিচ্ছে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য শরীফের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে কারো কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। অন্যদিকে স্থানীয়সুত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগীরা টাকা নেওয়া কথা প্রথমে স্বীকৃতি জানালেও পরবর্তী অস্বীকৃতি জানানোর জন্য ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন চাপের মুখে ফেলছেন অভিযুক্ত ইউপি সদস্য শরীফ।

মহেশখালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) বলেন, ওই ইউনিয়নে ‘জমি আছে ঘর নাই’ এই প্রকল্পের কোনো বরাদ্দ এখনও আসেনি। আগামীতেও আসবে কিনা তা আমার জানা নেই। মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।