সমুদ্র সুরক্ষা ও ব্লু-ইকোনমির জন্য নৌবাহিনীর গুরুত্ব বেড়েছে

বিস্তীর্ণ সামুদ্রিক অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব ও সমুদ্রসম্পদ সুরক্ষা এবং সরকারের ব্লু-ইকোনমি প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গুরুত্ব, কার্যপরিধি বহুগুণে বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী।

বুধবার (২৪ জুন) নগরের পতেঙ্গার বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে মিডশিপম্যান ২০১৭/বি ব্যাচ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার (ডিইও) ২০২০/এ ব্যাচের নবীন কর্মকর্তাদের গ্রীষ্মকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌবাহিনী প্রধান এ মন্তব্য করেন। তিনি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন।

নৌবাহিনী প্রধান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অসামান্য প্রজ্ঞায় বাংলাদেশ আজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে পরিচিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে আমরা পেয়েছি আরও বিশাল সামুদ্রিক অঞ্চলের নিষ্কণ্টক ভৌগোলিক অধিকার।

দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট, হেলিকপ্টার, আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যুদ্ধজাহাজ এবং সর্বোপরি দুটি সাবমেরিন সংযোজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীর মর্যাদায় উন্নীত হয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নেও নেওয়া হয়েছে ব্যাপক পদক্ষেপ। এ ছাড়া নৌসদস্যদের পেশাগত মানোন্নয়নে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে তোলা হচ্ছে।

এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২০১৭/বি ব্যাচের ৪৪ জন মিডশিপম্যান এবং ২০২০/এ ব্যাচের ২৯ জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসারসহ মোট ৭৩ জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেন। এর মধ্যে ৩ জন নারী কর্মকর্তাও রয়েছেন। সদ্য কমিশনপ্রাপ্তদের মধ্যে মো. আসিফ মেহরাজ সব বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জন করে সেরা চৌকস মিডশিপম্যান হিসেবে ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন। এ ছাড়া মিডশিপম্যান আবু সাদাত মো. সায়েম প্রশিক্ষণে ২য় সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী হিসেবে নৌপ্রধান স্বর্ণপদক এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ব্যাচ থেকে অ্যাক্টিং সাব লেফটেন্যান্ট আব্দুস সামাদ আশিক শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জনকারী হিসেবে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক লাভ করেন।

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে নৌবাহিনী প্রধান তরুণ প্রজন্মের কর্মকর্তাদের দেশরক্ষার মহান কর্তব্যে আত্মনিয়োগ করে দেশসেবার কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী বীর নৌসেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, নবীন কর্মকর্তারা নেভাল একাডেমি থেকে অর্জিত জ্ঞান যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেদের যোগ্য কর্মকর্তা হিসেবে গড়ে তুলবে এবং ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে এ প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও অগ্রগতির পথে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে।

পেশা হিসেবে দেশসেবার এ পবিত্র দায়িত্বকে বেছে নেওয়ায় নৌপ্রধান নবীন কর্মকর্তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান। প্রধান অতিথি নবীন কর্মকর্তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অটুট রাখার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম নৌঅঞ্চলের সীমিত সংখ্যক সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।