পার্কে নামাজ পড়া যাাবে না: যোগী আদিত্যনাথ

ফের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিল ভারতের উত্তর প্রদেশের সরকার। পার্কের মধ্যে কোন প্রকার নামাজ পড়া যাবে না বলে সম্প্রতি নতুন আইন জারি করেছে সেখানকার যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসন।

এর আগে যোগী আদিত্যনাথের সরকারের পক্ষ থেকে দেশটির একাধিক জায়গার নামবদল, সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিন ছুটি বাতিল-সহ নানা বিষয়ে নির্দেশ জারি করে বিতর্কে জড়িয়েছে। গত সপ্তাহে উত্তরপদেশের নয়ডার সেক্টর-৫৮-এর একটি পার্কে নামাজ পাঠ করা যাবে না বলে ফরমান জারি করেছে সেখানকার পুলিশ।

নির্দেশিকায় জানান, কোম্পানিগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে, তাদের কর্মীরা যদি পার্কটিতে নমাজ পড়েন, তা হলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকেই নির্দেশভঙ্গের দায় নিতে হবে। নির্দেশিকা জারির পরে ওই শিল্পাঞ্চলে মুসলিম কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

কোম্পানিগুলির কর্তৃপক্ষ পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ারও চিন্তাভাবনা করছেন বলে জানা গেছে। ওই এলাকার নয়ডার সেক্টর-৫৮ এলাকায় এইচসিএল-সহ ১২টি বহুজাতিক সংস্থাকে পার্কে নামাজ পড়া বন্ধের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে নোটিস দেওয়া হয়েছে।

সংস্থাগুলির মুসলিম কর্মীরা শুক্রবার কাজের সময় ওই পার্কটিতে কয়েক বছর ধরেই নামাজ পড়ে আসছেন।

ওই নোটিসে বলা হয়েছে, কোম্পানিগুলির কিছু মুসলিম কর্মীকে শুক্রবার পার্কেনামাজ পড়তে দেখা যায়। তাদের ওই কাজ করতে যেন নিষেধ করা হয়। তা সত্ত্বেও যদি পার্কে কর্মীদের নমাজ পাঠ করতে দেখা যায়, তা হলে কোম্পানিগুলিকে নির্দেশভঙ্গের দায় নিতে হবে।

খবরে আরো বলা হয়েছে, একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই নির্দেশিকা জারি করেছে। ওই সংগঠনটি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিল, প্রকাশ্যে নমাজ পাঠে এলাকায় ‘সম্প্রীতি বিঘ্নিত’ হচ্ছে।

একটি সূত্র জানায়, যোগী সরকারের এমন নির্দেশের কারণে পুরো এলাকায় অস্বস্তিতে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন। নয়ডার এসএসপি অজয় পালের বক্তব্য, কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে উদ্দেশ করে ওই নির্দেশিকা জারি করা হয়নি।

তিনি বলেন, কিছু লোক সেক্টর-৫৮’র পার্কটিতে নামাজ পড়ার অনুমতি চেয়েছিলেন। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেননি। কিন্তু এখনও সেখানে কিছু লোক ধর্মীয় কারণে জড়ো হচ্ছেন। তাদের উদ্দেশেই ওই নোটিস।

গত পাঁচ বছর ধরে পার্কটিতে নামাজ পড়ান মৌলানা নৌমান। তিনি জানান, গত ১৪ ডিসেম্বর তাদের পুলিশ জানিয়েছিল, ওই পার্কে নমাজ পাঠ করা যাবে না। তিনি সেই নির্দেশ মেনেছেন। কিন্তু তার পরেও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বলে দাবি মৌলানার।

একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে তিনি বলেন, নামাজ পড়ার জন্য এলাকায় শান্তি-সম্প্রীতি নষ্ট হয়েছে অভিযোগে গত ১৮ ডিসেম্বর আমাকে এবং আমার বন্ধু আদিল রশিদকে গ্রেফতার করা হয়। ২২ ডিসেম্বর জামিন পেয়েছি।

ওই অঞ্চলে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের এমন আইন জারি হওয়াকে ভারতের বিশ্লেষকরা তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তথ্যসূত্র: লেটেস্ট, আনন্দবাজার।