আগামী ৩০শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।সেই নির্বাচনকে অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে প্রত্যেক ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে প্রশাসন ও আইনশৃংখলা বাহিনীকে সবাত্মাক সহযোগিতার করার আহবান জানান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন। মেয়র বলেন গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে এই নির্বাচন জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্ব ও অর্থবহ। তাই আসন্ন নির্বাচনে যাতে নগরীতে শান্তি শৃংখলা বজায় থাকে এ ব্যাপারে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আপনাদের গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই সময়ে পুলিশ ও আইনশৃংখলা বাহিনী আপনাদের সহযোগীতা করবে। আপনারা শুধু সজাগ থাকবেন কোন ধরনের গোলযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ যাতে ব্যাহত না হয়।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে চসিকের কেবি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে চসিকের ৪১তম সাধারন সভায় সভাপতির বক্তব্যে সিটি মেয়র এ কথা বলেন। চসিক সচিব মোহাম্মদ আবুল হোসেন এর সঞ্চালনায় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়–য়া, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আকতার, মেয়রের একান্ত সচিব মুফিদুল আলম। সভায় চসিকের প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিল সহ চসিকের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহ সরকারি ও সেবা সংস্থা দায়িত্বশীল কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সিটি মেয়র তার বক্তব্যে বলেন মেয়র হিসেবে চসিকের দায়িত্ব গ্রহনের পূর্বে এই শহরে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ আলোকায়নের ব্যবস্থা ছিল। যা আধুনিক নগরের জন্য ছিল অপ্রতুল। নগরীর এই আলোকায়নের ব্যবস্থাকে শতভাগ উন্নীতকরণের কথার উল্লেখ করে নগরীর প্রধান প্রধান সড়কসহ অলি গলিতে এলইডি বাতি দ্বারা শতভাগ আলোকায়নে পরিকল্পনার কথা মেয়র বলেন। এই পরিকল্পনার আওতায় ইতিমধ্যে নগরীর প্রধান প্রধান সড়কে ৮৬ কিঃ মিটার এলইডি বাতি দ্বারা নগর সড়ক আলোকায়ন করা হয়েছে। আজ পর্যন্ত এ নগরীর প্রধান প্রধান সড়কসহ অলিগলিতে ৮০ ভাগ আলোকায়ন করা হয়েছে। অবশিষ্ট সড়ক সমূহ শতভাগ এলইডি বাতি দ্বারা আলোকায়নের জন্য একটি প্রকল্প চুড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রনালয়ে অপেক্ষামান আছে। এই প্রকল্পটি মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের হওয়ার পর চট্টগ্রাম নগরে শতভাগ আলোকায়ন হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। এ প্রসঙ্গে মেয়র নগরীর প্রতিটি ওর্য়াডসহ প্রধান প্রধান সড়ক, অলিগলিতে সন্ধ্যার পর সড়ক বাতি সমূহ প্রজ্জলিত হয় কিনা তা সার্বক্ষনিক তদারকির জন্য গুরুত্বারোপ করেন। সভায় সিটি মেয়র বলেন নগরীর ৪১ টি ওর্য়াডে প্রায় ৩৫ হাজার ৫৯৪টি টিউব বাতি ও এনার্জি বাতি রয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৭৫০টি বাতি বিভিন্ন কারণে বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সড়ক বাতি তদারকির জন্য অত্যাধুনিক ৪টি এরিয়াল লিফ্ট রয়েছে। নষ্ট কিংবা বন্ধকৃত এ সব বাতিগুলো এরিয়াল লিফটের মাধ্যমে জরুরী ভিত্তিতে মেরামত করার সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। সভায় মেয়র ৪১টি ওয়ার্ডে বিদ্যমান ওয়ার্ড ভিত্তিক বাতির পরিসংখ্যান পড়ে শোনান। সভায় নগর পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কাজে আরো জোরদার করার জন্য সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন মেয়র।
সভায় ওয়ার্ড পর্যায়ে সিটি কর্পোরেশনের পরিত্যক্ত জায়গায় উদ্যান স্থাপন বা বনায়ন করা, বৃক্ষরোপন ও গাছ পরিচর্যার নির্মিত্ত মালি ও ভ্যান গাড়ি প্রদান, কর্পোরেট সংস্থার সাথে এমওইউ স্বাক্ষরের মাধ্যমে তাদের অর্থায়নে নগরীর ফুটপাত, মিড আইল্যান্ড, সড়কদ্বীপ, গোলচত্বর ও ফোয়ারা সমূহ সৌন্দর্যবর্ধন ও সবুজায়নের কার্যক্রম গ্রহণকরণ, শীলকালিন সময়ে শুষ্ক মৌসুম হিসেবে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় ফায়ার সার্ভিস বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সদা সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা, ঋনের সার্ভিস চার্জ আবর্তক, দল, সিডিসি এর হিসেবে জমা, কর্পোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চলমান ছাদবাগান কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা, আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বিধায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডার গার্টেনের বার্ষিক পরীক্ষা-২০১৮ এর ফলাফল আগামী ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ প্রকাশ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় ২০১৯ শিক্ষাবর্ষের বই বিতরণ উৎসব পালন এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন ট্রেড কোর্স চালুকরণ বিষয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
সভায় অর্থ ও সংস্থাপন, শিক্ষা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য রক্ষা, নগর অবকাঠামো নির্মাণ ও সংরক্ষণ,আইন শৃংখলা,পরিচালনা ও রক্ষণা বেক্ষণ, যোগাযোগ, দারিদ্র হ্রাস করন ও বস্তি উন্নয়ন,নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন,পরিবেশ উন্নয়ন, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা, হিসাব নিরীক্ষা এবং পানি ও বিদ্যুৎ ষ্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যানগণ স্ব স্ব কমিটির কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন এবং আলোচনান্তে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সভার প্রারম্ভে জামালখান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদুল আলমসহ সম্প্রতি নগরীতে নিহত ব্যক্তিদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।