আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) প্রেসিডেন্ট নাওয়াফ সালাম লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। সালামের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ এবং তাদের মিত্র হিসেবে পরিচিত শিয়া রাজনৈতিক দল আমালের জন্য একটি বড় ধাক্কা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (১৩ জানুয়ারি) লেবাননের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউনের কার্যালয় নাওয়াফ সালামকে সরকার গঠন করার আহ্বান জানিয়েছে। এর আগে জোসেফ আউনের সঙ্গে পরামর্শকালে দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতা তার প্রতি সমর্থন জানান।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, সালাম বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন এবং মঙ্গলবার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। সংসদের ১২৮ জন আইনপ্রণেতার মধ্যে ৮৪ জনের সমর্থন পেয়েছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট আউন তাকে সরকার গঠনের দায়িত্ব দেয়ার জন্য ডেকেছেন।
২০২২ সালের অক্টোবর থেকে লেবাননের প্রেসিডেন্ট পদ খালি ছিল। এছাড়া এত দিন পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সক্ষমতার ভিত্তিতে দেশটির মন্ত্রিপরিষদ পরিচালিত হতো। জোসেফ আউনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া এবং নাওয়াফ সালামের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হওয়ার মধ্য দিয়ে লেবাননের সরকার ব্যবস্থায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা অচলাবস্থার অবসান ঘটল।
গত ৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের সমর্থনপুষ্ট সেনাপ্রধান জোসেফ আউন বিকেলে পার্লামেন্টে এক ভোটাভুটির মাধ্যমে লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। আর এরপরই দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় নাওয়াফ সালাম দুবার প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য প্রার্থী ছিলেন। তিনি সংস্কারবাদী হিসেবে পরিচিত। তিনি সুন্নি মুসলিম। শুধু সুন্নি মুসলিমরাই লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।
আইসিজের প্রধান নির্বাচিত হওয়ার পর গত বছর ইসরাইলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার করা গণহত্যা মামলা এবং অন্যান্য ট্রাইব্যুনালের নেতৃত্ব দেয়ার মধ্য দিয়ে এই বিচারক আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন।
কিছু সংবাদমাধ্যম নাওয়াফ সালামের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হওয়ার বিষয়টিকে ‘সুনামির’ সঙ্গে তুলনা করেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, গত রোববার সকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেন। এর আগ পর্যন্ত ক্ষমতাসীন তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতিকে ওই পদের জন্য সবচেয়ে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছিল।
সালামের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হওয়ার বিষয়টি লেবাননের সাম্প্রদায়িক দলগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যের বড় পরিবর্তন বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য নাজিব মিকাতির প্রতি হিজবুল্লাহর সমর্থন ছিল বলে ধারণা করা হয়। হিজবুল্লাহর সংসদীয় ব্লকের নেতা মোহাম্মদ রাদ সাংবাদিকদের বলেন, সালামকে মনোনীত করার পদক্ষেপ দেশে ‘বিভাজনের’ বীজ বপন করেছে। তিনি আশা করেন যে, মন্ত্রিসভা দেশের স্বীকারোক্তিমূলক ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তিকে সম্মান করবে