সরকার কিংবা আদালত যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করে তাহলে দলটির নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে চট্টগ্রাম বিভাগের সকল জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।
টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ এখন বাংলাদেশে রাজনীতি করারই সুযোগ পাচ্ছে না। ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে অবস্থান নিয়েছেন। দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও বিভিন্ন দেশে পালিয়ে গেছেন। কেউ কেউ দেশে থাকলেও আছেন আত্মগোপনে। অনেকে আবার গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। এমন অবস্থার মধ্যে সংসদ নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে বিএনপি-জামায়াতসহ অনেক রাজনৈতিক দল।
গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া দল আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না সেটি নিয়ে রাজনীতির মাঠে নানা আলোচনা চলছে। বাংলাদেশে গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্ররা বিভিন্ন সংস্কার করে অনুষ্ঠিতব্য আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সুযোগ না দেওয়ার কথা বলছে। ছাত্র নেতাদের দাবি, জুলাই হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত পতিত আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করার সুযোগ যেন না দেওয়া হয়।
আজ চট্টগ্রামে এক মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনের অংশগ্রহণের বিষয়টি মূলত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অথবা আদালতের আইনি সিদ্ধান্ত। শুনেছি, দলটি যাতে নির্বাচনে না আসতে পারে সেজন্য কেউ কেউ মামলা করেছেন। এক্ষেত্রে আদালত যে রায় দেবেন আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
নাসির উদ্দীন বলেন, দল করার অধিকার সবার আছে। আপনারা যে দলটির (আওয়ামী লীগ) কথা বলছেন, তারা অনেক আগে থেকেই রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত। সরকার যদি সেই দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা না করে আমরা তাদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে পারি না।
সিইসি বলেন, গেল তিনটি নির্বাচনে কী হয়েছে সেটি সবাই দেখেছে। এবার নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। দেশীয় কিংবা বহির্বিশ্বে কোনো চাপ নেই। আর তাই সবার কাছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে কমিশন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
সিইসি বলেন, সংবিধানে যে নির্দেশনা রয়েছে সেই নির্দেশনা অনুযায়ীই নির্বাচন কমিশন তার কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। খুব দ্রুতই ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজ শুরু হবে। কেউ অবৈধভাবে ভোটার হতে চাইলে সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সভায় আগামী ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ এবং মার্চ মাসে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের কথা জানান এ এম এম নাসির উদ্দীন।
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলীর সভাপতিত্বে সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামসহ সকল জেলা-উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা অংশ নেন।