‘নাশকতাকারীরা দেশপ্রেমিক হতে পারে না, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না’

সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়ানোর ও পাহাড়ি-বাঙালি সংঘাত উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এমনকি প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর একের পর এক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। নানামুখী আন্দোলন-সংগ্রাম ও নাশকতার মাধ্যমে সরকারের পথযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। কিন্তু সরকার সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থ হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, এ সরকার ব্যর্থ হলে অমানিশা নেমে আসবে। সরকার দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ৫ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরের লালখান বাজারে জামেয়াতুল উলুম মাদরাসা মাঠে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী ড. জামাল নজরুল ইসলামের স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। মরহুম ড. জামাল নজরুল ইসলাম স্মৃতি সংসদ এ সভার আয়োজন করে।

এ সময়ে প্রতিমাসেই কোনো না কোনো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে। এ সময়ে সচিবালয় ঘেরাও করা হয়েছে।

নাশকতাকারীরা কোনোভাবেই দেশপ্রেমিক হতে পারে না উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, নাশকতাকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ইতোমধ্যে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ তদন্তে যারা দোষী প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ড. জামাল নজরুল ইসলামের স্মৃতিচারণ করে উপদেষ্টা বলেন, তিনি অত্যন্ত সজ্জন, বিনয়ী ও সরল প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। মাদরাসার প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ ছিল। তিনি এই জামেয়াতুল উলুম লালখান বাজার মাদরাসা প্রতিষ্ঠার জন্য ৩০ বিঘা জমি দান করেছেন। তিনি একাধারে গণিতবিদ, জ্যোর্তিবিদ ও বিশ্বতত্ত্ববিদ। গোটা পৃথিবী নিয়ে তিনি গবেষণা করেছেন।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ড. জামাল নজরুল ইসলাম ছিলেন একজন নির্মোহ দেশপ্রেমিক। তিনি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ বেতনের চাকরি ত্যাগ করে দেশে ফিরে এসে মাত্র আড়াই হাজার টাকা বেতনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন।

উপদেষ্টা ড. জামাল নজরুল ইসলামকে নিয়ে স্মৃতিচারণমূলক স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

জামেয়াতুল উলুম লালখান বাজার মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক মুফতি মুহাম্মদ ইজহারুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এ অনুষ্ঠানে ইরান দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সিলর সৈয়দ রেজা মীর মোহাম্মদী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার বিশেষ অতিথি ছিলেন।

এর আগে উপদেষ্টা চট্টগ্রাম মহানগরে কল্পলোক আবাসিক এলাকায় জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক বোরহান উদ্দিন মো. আবু আহসান উপস্থিত ছিলেন।