সাধারণ ছুটি বাড়লো ১৬ মে পর্যন্ত

করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী ৭ থেকে ১৪ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এসময় জনসাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা কিংবা সীমিত করা যেতে পারে।

এর মধ‌্যে ৬ মে বৌদ্ধ পূর্ণিমার সরকারি ছুটি, ৮ ও ৯ মে এবং ১৫ ও ১৬ মে (শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলো সরকারের ঘোষিত এই ছুটি ও নিষেধাজ্ঞার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

সোমবার (০৪ মে) দুপুরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে:

>সাধারণ ছুটি/চলাচলে নিষেধাজ্ঞাকালে এক জেলা থেকে অন্য জেলা এবং এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় জনসাধারণের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। জেলা প্রশাসন/আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এই নিয়ন্ত্রণ সতর্কভাবে বাস্তবায়ন করবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (প্রয়োজনীয় ক্রয় বিক্রয়, ওষুধ, চিকিৎসাসেবা, মৃতদের দাফন/সৎকার) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে আসা যাবে না।

>এই ছুটি/চলাচল নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে জনসাধারণ ও সব কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ জারি করা নির্দেশমালা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

>রমজান এবং ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে সীমিত পরিসরে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখার স্বার্থে দোকান পাট খোলা রাখা যাবে। তবে ক্রয়-বিক্রয়ের সময় পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে। বড় বড় শপিংমলের প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আসা যানবাহনকে অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে। দোকান পাট এবং শপিংমলগুলো আবশ্যিকভাবে বিকেল ৫টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।

>সাধারণ ছুটিতে জরুরি পরিষেবা যেমন বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দর (স্থলবন্দর, নদীবন্দর, সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডাক সেবা, সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা এ ছুটির বাইরে থাকবেন।

>সড়ক ও নৌপথে সব ধরনের পণ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত যানবাহন, (ট্রাক, লরি, কার্গো ভেসেল প্রভৃতি) চলাচল অব্যাহত থাকবে।

>কৃষি পণ্য, সার, কীটনাশক, খাদ্য, শিল্পপণ্য, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের মালামাল, কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এসবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ক্ষেত্রে এ ছুটি প্রযোজ্য হবে না।

>চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক, কর্মী, এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মী, গণমাধ্যমে (ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া) এবং ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কে নিয়েজিত কর্মীরা সাধারণ ছুটির আওতা বহির্ভুত থাকবেন।

>ওষুধ শিল্প, উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী শিল্পসহ সব কলকারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে চালু করতে পারবে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক প্রণীত বিভিন্ন শিল্প কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণে নির্দেশনা প্রতিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

> পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তীতে শিল্প কারখানা, কৃষি এবং উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলো পর্যায়ক্রমে উন্মুক্ত করা হবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধ ও জনগণের সুরক্ষায় ৫ মে পর্যন্ত সরকারি ছুটি চলছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় ১৬ মে পর্যন্ত সরকারি ছুটি বাড়ানো হলো।

করোনা সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। তারপর ৪ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল, পরে তা বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল করা হয়। চতুর্থ দফায় ১৪ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়। এ অবস্থায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় পঞ্চম দফায় ছুটি বাড়ানো হয় ৫ মে পর্যন্ত। সেটি বাড়িয়ে এখন ১৬ মে পর্যন্ত ছুটি করা হয়েছে।