কাপ্তাইয়ে উপজেলা নির্বাচন: সহাবস্থানে থেকেই প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা

মোঃ নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই (রাঙামাটি)।

কারো বিরুদ্ধে নেই কোন সমালোচনা, নেই কাঁদা ছোড়াছড়ি, নেই কোন অভিযোগ, কিংবা পোস্টার ছিড়ে ফেলার মতো অপরাধ। অনেকটা সহাবস্থানে থেকেই প্রার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে দিনরাত প্রচার প্রচারনায় চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী ২১ মে’ অনুষ্ঠিতব্য রাঙামাটি জেলাধীন কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগে এমনই চিত্র দেখা গেছে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। গত ২ মে প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। গত বুধবার (৮ মে) ও বৃহস্পতিবার (৯ মে) উপজেলার রাইখালী, ওয়াগ্গা এবং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নে গিয়ে একাধিক ভোটারদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, কোন রকম সহিংসতা ছাড়াই এপর্যন্ত প্রার্থীরা তাদের প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। রাইখালী বাজার নিবাসী কাপ্তাই উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক কুমার ভট্টাচার্য ও রাইখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ তালুকদার বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কোন রকম উস্কানি, সহিংসতা ছাড়াই আজ পর্যন্ত প্রার্থীরা তাদের প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচন পরবর্তীও এমন পরিবেশ ঠিক থাকবে। ওয়াগ্গা ইউনিয়নের সাফছড়ির বাসিন্দা সুনিল তনচংগ্যা, কুকিমারার মংসু মারমা, শীলছড়ির আবুল হোসেন, চন্দ্রঘোনা কেপিএম আবাসিক এলাকার কয়লার ডিপুর বাসিন্দা সুনিল মল্লিক বলেন, একটি উৎসব মুখর পরিবেশে কোন রকম উত্তেজনা ছাড়াই প্রার্থীরা প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। এপর্যন্ত আমাদের চোখে কোন প্রকার উস্কানি মূলক কথাবার্তা কোন প্রার্থী বা তাদের সমর্থকদের কাছ থাকে শুনতে পাইনি। এদিকে, “আনারস” প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবী এই বলেন, আমি সবসময় রাজনৈতিক সহাবস্থানে বিশ্বাসী। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস। জনগণ যাকে ভোট দিবে তিনিই নির্বাচিত হবেন। এখানে জোর করে কিংবা বল প্রয়োগ করে কাউকে ভোট দিতে বলা উচিত নয়। “ঘোড়া” প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী সুব্রত বিকাশ তনচংগ্যা (জটিল) বলেন, আমার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীরা আমার রাজনৈতিক সহকর্মী। আমরা একসাথে সবসময় রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি। তাই আমরা একসাথে একটি শান্তিপূর্ণ সহিংসতামুক্ত নির্বাচন জনগণকে উপহার দিব। এখানেই জনগণ ফ্যাক্টর। তাদের মন জয় করে ভোট আদায় করাই আসল কাজ। “দোয়াত কলম” প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী মোঃ নাছির উদ্দিন বলেন, একটি শান্ত, অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জনপদ হিসাবে কাপ্তাইয়ের সুনাম আছে। আমিও চাই অবাধ, সুষ্ঠু, সহিংসতামুক্ত একটি নির্বাচন। তাই আমরা পরস্পরের বিরুদ্ধে কাঁদা ছোড়াছুড়ি না করে দিনরাত জনগণের কাছে ছুটে যাচ্ছি। ভোটের মাঠে জনগণই আমার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করবে। “টিয়া” প্রতিক নিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী সুইপ্রু মারমা, “টিউবওয়েল” প্রতীক নিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল হাই খোকন এবং “উড়োজাহাজ” প্রতীক নিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন, আমরা সবসময় শান্তিতে বিশ্বাসী, এখানে জনগণ যাকে নির্বাচিত করবেন তিনিই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে বিজয়ী হবে৷ দিনশেষেতো আমরা সবাই একসাথেই চলবো। “ফুটবল” প্রতীক নিয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারহানা আহমেদ পপি এবং “কলসি” প্রতীক নিয়ে অপর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বিউটি হোসেন বলেন, কারো বিরুদ্ধে আমাদের কোন অভিযোগ নেই। ভোটাররা যাকে যোগ্য মনে করবেন, তাকেই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন। কাপ্তাই থানার ওসি মোঃ আবুল কালাম বলেন, এপর্যন্ত কোন রকম সহিংসতা ছাড়া প্রার্থীরা তাদের প্রচার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্য থানা পুলিশ সদস্যরা সবসময় মাঠে কাজ করছেন। কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, এপর্যন্ত কোন প্রার্থী অপর কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে আমার কাছে কোন অভিযোগ করেনি। আগামী ২১ মে’ একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন করতে প্রশাসন বদ্ধপরিকর।