ফটিকছড়িতে বালির গাড়ির চাপে নতুন সড়কে বেহাল দশা!

শওকত হোসেন করিম, ফটিকছড়ি :
কয়েক মাস আগেও সবুজের মাঝে খুব সুন্দর একটা সড়ক ছিল। নতুন সড়ক পেয়ে স্বপ্ন দেখছিল স্থানীয় এলাকাবাসী। নতুন সড়ক পেয়ে ১ ঘন্টা সড়ক সময় লাগত মাত্র ১৫ মিনিট। কিন্তু ওই আশা কাল হয়ে দাঁড়ালো বালি বোঝাই ট্রাকের কারণে। অতিরিক্ত বালি বোঝায় ট্রাকের চাপায় সড়কের সৃষ্টি হয়েছে ছোট্ট বড় অনেক গর্ত। তার উপর হালকা বৃষ্টিতে অবস্থা আরও শোচনীয়। কারণ গর্তের গভীরতা বোঝার উপায় থাকে না। সড়কের এমন দুর্বল দুর্দশা দেখা মিলবে ফটিকছড়ি উপজেলার ফেনুয়া টু টেকবাড়িয়া সড়কে।
এলাকার মানুষের অভিযোগ বলেন, নিয়ম ভেঙে লেলাঙ খাল হতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলন করে যাচ্ছে। বালি উত্তোলনের অনুমতি থাকলেও অতিরিক্ত পরিমাণে বালি নিয়ে বড় বড় ট্রাক চলায় সড়কের এমন শোচনীয় দশা সৃষ্টি হলেও কারও কোনও মাথা ব্যাথা নেই।
সোমবার (১ এপ্রিল) বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার কর্ণফুলী চা বাগানের পশ্চিম পাশে লেলাং থেকে কাঞ্চননগর যাওয়ার রাস্তা ফেনুয়া বিল টু টেকবাড়িয়া ব্রিক সলিন সডকের এ করুন দশা দেখা যায়।
ওই রাস্তার পাশে লেলং খালে ফেনুয়া বালি মহালের ইজারা রয়েছে। তবে, ইজারার নিয়ম ভেঙে ড্রেজার মেশিন দিয়ে তুলা হয় বালি। লেলাং খাল থেকে বালি তুলে সারি সারি বড় ট্রাক যাতায়াত করে গ্রামীণ এ রাস্তা দিয়ে। গ্রামবাসীর ক্ষোভ, “অতিরিক্ত বালি নিয়ে দিনরাত্রি গাড়ি যাচ্ছে। এত চাপ নেওয়ার ক্ষমতা এই রাস্তার নেই। তাই রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে রাস্তায় এখন বড় বড় গর্ত। তাতে এই সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমেছে। সেই সঙ্গে পানি-কাদায় এখন পায়ে হেঁটেও এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না।
হোসেন আলী নামে এক পথচারী বলেন- এ সড়ক দিয়ে সিএনজি, মোটরসাইকেল ছোট ছোট গাড়ি গুলো চলে কিন্তু বেশিরভাগ সময়ে ফেনুয়া থেকে বড় বড় ট্রাক বালি নিয়ে যায়। সামান্য এ ইটের রাস্তায় এসব গাড়ি চললে রাস্তার সব ইট ভেঙে গর্ত হয়ে রাস্তা ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। বালির গাড়ি গুলোর জন্যেই এ রাস্তা এখন চলাচল অনুপযোগী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানদার বলেন- রাতে বড় ট্রাক গুলো বালি লোড করে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। আমাদের প্রধান যাতায়াত ব্যবস্থা এ ফেনুয়া সড়কটি শুধু নষ্ট হচ্ছে বালি বোঝাই ট্রাকের কারণে। আমরা কিছু বলার সাহস পাচ্ছিনা। তারা উল্টো ধমক দেয় সরকারি ইজারা দিয়ে বালি তুলছে কে কি বলবে?
মোটরসাইকেল চালক সোহেল আলম বলেন- কাঞ্চন নগর থেকে লেলাং যাওয়ার সহজ রাস্তা এবং উপজেলায় যাওয়ার বিকল্প রাস্তা হচ্ছে ফেনুয়া টু টেকবাড়িয়া সড়ক। নিয়মিত এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করি। ফেনুয়া বিলের সামনে এবং রাস্তার অনেক অংশে গাড়ি চালানো এখন অনুপযোগী। মোটরসাইকেল নিয়ে অনেক সময় অনেকে পড়ে আহত হন। একজন লোক আসলে গাড়ি থামিয়ে সাইড দিতে হয় কারণ রাস্তার দু’পাশে বড় বড় গর্ত, বৃষ্টি হলে এ সড়ক দিয়ে জীবন হাতে নিয়ে চলতে হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন- সরকারি ইজারা থাকলেও বালি মহালে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি তুলার নিয়ম নেই। সড়ক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বিষয়টি জানা ছিলোনা, এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।