তানজিদের রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরি প্লে-অফে চট্টগ্রাম

হারলে বাদ, জিতলে নিশ্চিত হবে প্লে-অফের টিকিট। ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে খুলনা টাইগার্সকে হারালো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। টপকে গেল বিপিএলের রাউন্ড রবিন লীগ। গতকাল চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে খুলনার বিপক্ষে চট্টগ্রামের ৬৫ রানের জয়ের নায়ক তানজিদ হাসান তামিম। ম্যাচসেরা এই ওপেনার সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে গড়েছেন রেকর্ড। চট্টগ্রামে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে তানজিদ তামিমের সেঞ্চুরিতে ভর করে ৪ উইকেটে ১৯২ রান তোলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। জবাবে ১২৭ রানে গুটিয়ে যায় খুলনা টাইগার্সের ইনিংস।

টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৪ রানেই প্রথম উইকেট হারায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ৭ বলে ১ রান করে নাসুম আহমেদের শিকার হন মোহাম্মদ ওয়াসিম। দ্বিতীয় উইকেটে ৫৬ রান তোলেন সৈকত আলী ও তানজিদ হাসান তামিম। সৈকত ১৮ রানে আউট হলে ভাঙে এই জুটি।

এরপর তৃতীয় উইকেটে টম ব্রুসকে নিয়ে আরও ১১০ রান তোলেন তানজিদ। এরইমধ্যে ঝড়ো সেঞ্চুরি হাঁকান তিনি। ১৮.১ ওভারে পার্নেলের শিকার হওয়ার আগে ৬৫ বলে ৮টি করে চার-ছক্কায় ১১৬ রান করেন টাইগার ওপেনার। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিতেই রেকর্ড গড়েন তানজিদ। বিপিএলে এটি বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। তালিকার শীর্ষে তামিম ইকবালের ১৪১* রান। দুইয়ে সাব্বির রহমানের ১২২ রান। তানজিদের মতো সমান ১১৬ রানের ইনিংস খেলেছেন আরও দু’জন, ক্রিস গেইল এবং লেন্ডন সিমন্স। অর্থাৎ বিপিএলে সর্বোচ্চ দেশি-বিদেশি স্কোরারদের তালিকায় যৌথভাবে তৃতীয় তানজিদ তামিম। চট্টগ্রাম-খুলনার গতকালের ম্যাচ পর্যন্ত এটিই চলতি বিপিএলের সর্বোচ্চ স্কোর। এতে তানজিদ ছাড়িয়ে যান তাওহীদ হৃদয় এবং উইল জ্যাকসের ১০৮ রানের ইনিংসকে। তাছাড়া বিপিএলে চট্টগ্রামের মাঠে এটিই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর। ঝড়ো ইনিংসে ৩২ বলে হাফ সেঞ্চুরি হাঁকানো তানজিদ তামিম পরের ৫০ রান করেন ২৮ বলে। পুরো ইনিংসের স্ট্রাইকরেট ১৭৮.৪০।
তানজিদ তামিম দলীয় ১৭০ রানে আউট হওয়ার পর স্কোরবোর্ডে মাত্র ১৫ রান যোগ করতেই সাজঘরে ফেরেন রোমারিও শেফার্ড। ৫ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১০ রান করেন তিনি। ২৩ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৩৬* রান করেন টম ব্রুস। অধিনায়ক শুভাগত হোম অপরাজিত থাকেন ৭ রানে। চট্টগ্রামের ইনিংসে একটি করে উইকেট নেন খুলনার ওয়েন পার্নেল, নাসুম আহমেদ, জ্যাসন হোল্ডার এবং মুকিদুল ইসলাম।

রান তাড়ায় নেমে ব্যাটিং ধসে পড়ে খুলনা টাইগার্স। দলীয় ১৩ রানে প্রথম উইকেট হারানো খুলনা ১০০ ছোঁয়ার আগে হারায় ৬ উইকেট। তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে পারভেজ হোসেন ইমন ৬ রানে ফেরার পর শাই হোপের সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়। খুলনার ইনিংসে এটিই সর্বোচ্চ জুটি। ৮.১ ওভারে বিজয় ২৪ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৩৫ রানে আউট হলে ভাঙে এই পার্টনারশিপ। ২১ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৩১ রান করেন শাই হোপ। প্রথম ৬ ব্যাটারের মধ্যে বিজয় এবং হোপ ছাড়া কেউ ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্কের কোঠা। ইমন ছাড়াও ৬ রান করে করেন এভিন লুইস এবং আফিফ হোসেন। ৭ রানে সাজঘরে ফেরেন মাহমুদুল হাসান জয়। ৯৯ রানে ৯ উইকেট হারানো খুলনা টাইগার্স ২০ ওভারের পঞ্চম বলে ১২৭ রানে অলআউট হয়ে যায়। শেষ ৫ ব্যাটারের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৮ রান করেন জ্যাসন হোল্ডার। ১৭ বলের ইনিংসটি একটি করে চার-ছক্কায় সাজান এই ক্যারিবিয়ান। এ ছাড়া ওয়েন পার্নেল ২ এবং নাসুম ও মুকিদুল ৩ করে রান করেন। ৬* রানে অপরাজিত ছিলেন আরিফ আহমেদ। খুলনার ইনিংসে ৪ ওভারে ২৫ রানের খরচায় ৩ উইকেট নেন চট্টগ্রাম অধিনায়ক শুভাগত হোম। দু’টি উইকেট পান বিলাল খান।

১২ ম্যাচে ৭ জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে বিপিএলের প্লে-অফে পৌঁছেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। চট্টগ্রামের কাছে হারলেও এখনো প্লে-অফ খেলার সুযোগ রয়েছে খুলনা টাইগার্সের। প্লে-অফে পৌঁছাতে খুলনার প্রতিদ্বন্দ্বী এখন ফরচুন বরিশাল। ১১ ম্যাচে ৬ জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে বিপিএল টেবিলের চারে রয়েছে তামিম ইকবালের বরিশাল। ১১ ম্যাচ খেলে ১০ পয়েন্ট নিয়ে খুলনা টাইগার্স পাঁচে। প্লে-অফে যেতে হলে লীগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই খুলনার। একইসঙ্গে কামনা করতে হবে ফরচুন বরিশালের হার। বরিশাল জিতলে বিনা হিসাবে বাদ খুলনা। বরিশাল হারলে রান রেটের হিসাবে প্লে-অফ খেলার সুযোগ থাকবে খুলনার।