টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল বন্ধ, লোকসানে মাথায় হাত পর্যটন ব্যবসায়ীদের

টেকনাফ নৌরুট দিয়ে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল অনির্দিষ্টকাল বন্ধের ঘোষণায় পর্যটম মৌসুম ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। হঠাৎ জাহাজ চলাচল বন্ধ হওয়ার ঘোষণায় লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। বাতিল করতে হচ্ছে বুকিং দেয়া হোটেল-রিসোর্ট। ফলে দুঃচিন্তার ভাঁজ পড়েছে ব্যবসায়ীদের কপালে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জাতীয় নির্বাচনের ফলে পর্যটন মৌসুমে তেমন পর্যটক সমাগম হয়নি। পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীরা কোনো রকমে দিনাতিপাত করলেও মধ্য জানুয়ারি থেকে পর্যটকের দেখা মেলে। ১৫-২০ দিন নিয়মিত টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌরুটে প্রচুর পর্যটক সমাগমও ঘটে। ফলে পর্যটন মৌসুম ব্যবসায়ীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। জমে উঠে তাদের ব্যবসাও। হঠাৎ করে মিয়ানমারের রাখাইনের সেনা-বিদ্রোহীদের লড়াই শুরু হলে তা এদেশের সীমান্তেও প্রভাব পড়ে। এর ফলে মিয়ানমারের তিন শতাধিক বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) লড়াইয়ে টিকতে না পেরে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

প্রতিদিন গুলাগুলি ও বোমার শব্দে প্রকম্পিত হয় বাংলাদেশ সীমান্ত। গুলি-মর্টালশেল এসে পড়ে এদেশের সীমান্তেও। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। তাই নিরাপত্তাজনিত ও মিয়ানমারের অভ্যন্তরে এদেশে ঘেষা সীমান্তে অস্থির পরিস্থিতি কারণে কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন।
পর্যটন ও রিসোর্ট ব্যবসায়ী নুর কবির জানান, টাকা-পয়সা খরচ করে পর্যটন ব্যবসায় নেমেছি। এমন পরিস্থিতিতে আর্থিকভাবে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে। বুকিং দেয়া সকল রুম বাতিল ও টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতি বেশিদিন হলে আমাদের পর্যটন ব্যবসায় ধ্বস নামবে। ফলে সংসারের খরচ মেটাতেও হিমশিম খেতে হবে।

আরেক পর্যটন ব্যবসায়ী মুহাম্মদ আইয়ুব খান বলেন, আমাদের সংসার চলে পর্যটন মৌসুমের আয় দিয়ে। হঠাৎ পর্যটক আসা বন্ধ ষোষণা করায় আমরা দ্বিধাদ্বন্দে পড়ে গেছি। যদি সহসাই জাহাজ চলাচল না করে, তাহলে আমাদের সংসারে আবারো টানাপোড়ন শুরু হবে।

কেয়ারী সিন্দাবাদ জাহাজের ইনচার্জ মো. শাহ আলম জানান, লোকসান কাটিয়ে উঠার মুহূর্তে ফের বন্ধের ঘোষণায় স্টাফসহ সকলদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। দ্রুত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীদের মঙ্গল হবে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯ টার দিকে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্মকর্তা ( ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী আগামী শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণে টেকনাফ হতে সেন্টমার্টিনগামী সকল পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানান। তিনি আরো বলেন, পরবর্তী ব্যবস্থা সম্পর্কে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সকলকে অবগত করা হবে। তবে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার হতে চলাচলকারী জাহাজ চলাচল অব্যাহত থাকবে বলে ইউএনও জানান।