নিজস্ব প্রতিবেদক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া বিএনপির প্রার্থীদের দেশের বাইরে চলে যেতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ২০ দলীয় জোটের নেতারা।
সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে জোটের সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ২০ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, চট্টগ্রাম-১৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৩ আসনের সরওয়ার জামাল নিজাম, চট্টগ্রাম-৮ আসনের আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম-১২ আসনের এনামুল হক এনাম প্রমুখ।
অলি আহমদ বলেন, প্রতিহিংসামূলক রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা চাই জনগণ যেন নিরাপদে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। কিন্তু এখনও বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, হাতের কাছে যাকে পায়, তাকেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। জামিন নেওয়ার যখন সময় হয় তখন তাকে আরেকটি মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে। যারা এ কাজ করছেন তাদের বলতে চাই, আপনারা কি সৃষ্টিকর্তাকে ভয় করেন না? আপনারা কি মনে করেন না, অন্যায় কাজে লিপ্ত থাকলে শাস্তি পাবেন।
‘পূর্ববর্তী যারা অন্যায় কাজ করেছেন তাদের সন্তান, স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের অপমৃত্যু হয়েছে। অনেকেই কারাবরণ করেছে। এটি আল্লাহর স্বাভাবিক শাস্তি।বলেন অলি আহমদ।
তিনি বলেন, এখন মনে হচ্ছে আমরা নিজের দেশে পরাধীন। আমাদের কোনো বক্তব্য নেই, ন্যা্য়বিচার নেই। যখন প্রথমে জামিন নিয়ে জজকোর্টে যাচ্ছে তখন কোর্ট বিচারের জন্য সময় দিচ্ছে না।
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা সরকারের কথায় কাজ করবেন না। আপনারা জনগণের বন্ধু।
‘জনগণ যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করেন। ঘরে ঘরে ঢুকে ভয় দেখাবেন না। দেশ ক্রমশ রক্তপাতের দিকে যাচ্ছে। যদি রক্তপাত হয়, এ জন্য দায়ী সরকার।’ বলেন অলি আহমদ।
২০ দলীয় জোটের নেতারাসরকার অশান্তি চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচন, চাই শান্তি। কিন্তু সরকার চায় অশান্তি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, আপনি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা ঐক্যফ্রন্ট থেকে যে ৭ দফা দাবি করেছি তার একটিও পূরণ হয়নি। নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে এখনও পর্যন্ত সন্ধিহান। এরপরও আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি, যাতে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসে। প্রতিটি এলাকায় এখনও পর্যন্ত পুলিশের অভিযান চলছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে বহু নেতাকর্মীদের।
‘এর মানে সরকার চাইছে জনগণকে বাইরে রেখে আরও একটি নীলনকশার নির্বাচন। সরকারদলীয় প্রার্থীরা দুই মাস আগে থেকে প্রচারণা চালিয়ে নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন করছে। কিন্তু আমরা আইনের প্রতি সম্মান রেখে নির্বাচনী প্রচারণা থেকে বিরত থেকেছি। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবো, তাদের সহযোগিতা করবো। কিন্তু রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কখনো শ্রদ্ধাশীল হবো না।’ যোগ করেন আমীর খসরু।
তিনি বলেন, আমরা কাল থেকে গণসংযোগ করবো, ক্যাম্পেইন করবো- এতে যেন কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন না হই। কাল থেকে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কার্যক্রম জনগণ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। তারা সাংবিধানিক ভূমিকাটুকু পালন করছে কি-না।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, জনগণ এখন ভোট দিতে বদ্ধ পরিকর। তারা বলছে, এবারে কোনো শক্তি তাদের থামাতে পারবে না। সরকার জনগণের ভয়ে এবার ভিন্ন কৌশল নিয়েছে। বিএনপি প্রার্থীদের ঘরে ঘরে গিয়ে দেশের বাইরে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু আমরা পিছপা হবো না।