প্লুটোর গায়ে বরফের হৃদয়!

বরাবরই মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা মহাবিশ্বের নতুন নতুন ছবি তুলে চমকে দেয় আমাদের। আর এসব ছবি দেখে অভিভূত হন মহাকাশপ্রেমীরা। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। বরাবরের মতোই এবারও প্লুটোর একটি ছবি তুলে চমকে দিয়েছেন সবাইকে।

তবে প্লুটোর ছবি দেখে কেউ অভিভূত হননি, অভিভূত হয়েছেন প্লুটোর বুকে ফুটে ওঠা হৃদয় দেখে। খবর এনডিটিভির।

রোববার (২৮ মে) নাসার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, গ্রহটির গায়ে একটি বড় অংশজুড়ে সাদা রঙের ছোপ। যার আকৃতি হৃদয়ের মতো। প্লুটোর এই ছবি ধরা পড়েছে নাসার নিউ হরাইজনস মহাকাশযানের ক্যামেরায়।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ওই সাদা হৃদয় আসলে প্লুটোর মধ্যকার বরফের স্তূপ। সেটি একটি হিমবাহ বলেই মনে করা হচ্ছে। এই বরফে ঢাকা এলাকায় মূলত নাইট্রোজেন এবং মিথেন গ্যাস রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে বরফের পর্বত, উপত্যকা, গর্ত এবং সমতল এলাকা। যার সবটাই নাইট্রোজেন এবং মিথেনের বরফ দিয়ে তৈরি।

প্লুটোর যে ছবি নাসা পোস্ট করেছে, তাতে একটি ঘোলাটে হলুদ বর্ণের গ্রহ দেখা গিয়েছে। তার ওপর কখনো গাঢ় কখনো হালকা রঙের ছায়া রয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যে যে এলাকায় গাঢ় অন্ধকার দেখা যাচ্ছে, সেখানে গর্ত এবং ফাটল রয়েছে। বেশির ভাগ অংশই ছায়ায় ঢাকা। মাঝের হৃদয় আকৃতির ওই এলাকাটুকু তুলনামূলক সাদা। সেখানে পাহাড়, পর্বত, উপত্যকা মিলে আলাদা একটি জগৎ গড়ে উঠেছে।

২০০৬ সালে নাসার নিউ হরাইজনস মহাকাশযান চালু হয়। তা প্লুটোয় পৌঁছায় ২০১৫ সালে। প্লুটো ছাড়াও তার চারপাশে ঘুরতে থাকা উপগ্রহ এবং অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তুর দিকে নজর রেখেছে এই মহাকাশযান।

সৌরজগতের সবচেয়ে দূরের গ্রহ প্লুটো। গ্রহ না বলে একে বামন গ্রহই বলেন সবাই। প্লুটো ১৪০০ মাইল (২২৫০ কিমি) চওড়া বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক প্রস্থের সমান বা চাঁদের প্রস্থের দুই-তৃতীয়াংশের সামান্য বেশি। এর গড় তাপমাত্রা মাইনাস ৩৮৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা মাইনাস ২৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্লুটোর পৃষ্ঠ বরফ,পানি, নাইট্রোজেন ও মিথেন দিয়ে তৈরি।