বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশি জাতিসত্তার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ নববর্ষ উদযাপন। বাংলা নববর্ষ বাংলাদেশিদের হৃদয়ে তার প্রকাশ অনন্য ভিন্নরুপ। আবহমানকাল ধরে নানারূপ ও বৈচিত্র নিয়ে জাতির জীবনে বার বার ঘুরে আসে পহেলা বৈশাখ। নববর্ষের উৎসবের সঙ্গে যেন ভরে ওঠা প্রকৃতি ও প্রাণের যোগ আবহমানকাল ধরে বিদ্যমান। আমাদের হৃদয়ে সঞ্চারিত হয় স্বজাতির অতীত গৌরব ও ঐশ্বর্য। আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সুদুর অতীতকাল ধরে নির্মিয়মাণ বিশালত্ব এক শক্ত ভিত্তি লাভ করে। ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও মনুষ্যত্বের বাণী একত্রিত হয়ে গঠন করে এক সুগ্রন্থিত জাতি।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশ-বিদেশের সব বাংলাদেশিদের আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে এই বাণী দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
তারেক রহমান বলেন, সুপ্রাচীনকাল ধরে গড়ে ওঠা ভাষা ও কৃষ্টির নিবিড় বন্ধন ভেঙে ফেলার জন্য বিদেশি আধিপত্যবাদী প্রভুরা সাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন ও সদা জাগ্রত থাকতে হবে।
তিনি বলেন, জাতির আত্মপরিচয়ে পহেলা বৈশাখ এক উজ্জ্বল উপাদান। প্রতি বছর নববর্ষ পেছনের আলোকের দীপ্তিতে উৎকর্ষতা ও অগ্রগতির পথে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে প্রেরণা দেয়। এখন আমাদের প্রাণবন্ত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের উদার দৃষ্টিভঙ্গির যে সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং প্রবণতা রয়েছে তার ভিত্তিতে বহুমত ও পথের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চিরস্থায়ী কাঠামো গড়ে তুলতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, নানা ঘটনা ও দুর্ঘটনার সাক্ষী ১৪৩১ সাল অতিক্রম করে ১৪৩২ সালের প্রভাতে অজানা কাল-প্রাঙ্গণের সীমানায় আমরা উপস্থিত হয়েছি। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান ভেসে যাচ্ছে রক্তে-বিষ্ফোরণ। বিশ্বে শান্তি আনতে সমাধানহীন এক প্রহেলিকার মধ্যে থাকলে হবে না। স্বার্থ কখনো সমাধান নয়। আমরা নি:স্বার্থ সমাধান চাইলে রক্ত ঝরবে না, শান্তির জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে না। আমাদের গত বছরের ক্লান্তি, হতাশা ও গ্লানিকে অতিক্রম করে নতুন উদ্যমে অগ্রসর হতে হবে।
নববর্ষের প্রথম দিনে সকলের কল্যাণ ও শান্তি কামনা করে তিনি আরও বলেন, বৈশাখের বহ্নিতাপে সমাজ থেকে মুছে যাক অসত্য, অন্যায়, অনাচার ও অশান্তি। চারিদিকে প্রবাহিত হোক শান্তির সুবাতাস, সুশীলা নদী, সমস্ত জগৎ হোক অমৃতময়।
অপর এক বাণীতে তারেক রহমান বলেন, পার্বত্য অঞ্চলবাসীসহ বাংলাভাষীরা বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য জাতিসত্তা। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদই এই ভূখণ্ডে সব জনগোষ্ঠীকে অভিন্ন সত্তা দান করেছে। পার্বত্য অঞ্চলবাসী বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বিঝু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু ও বিহু এবং বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে সব সম্প্রদায়ের প্রতি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা অভিবাদন জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, পাহাড়ি বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠী জনগণের ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ইতিহাস বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতির অভিন্ন অংশ। যা আমাদের ঐতিহ্যকে মহিমামণ্ডিত, প্রাচুর্য্যময় ও সৌন্দর্য্যমণ্ডিত করেছে। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সারা বিশ্বে দেশের মর্যাদা এক উজ্জ্বলতর ভিন্নমাত্রা লাভ করেছে। এদেশের বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়সহ সকল নাগরিকের সমান অগ্রগতি, বিকাশ, নিরাপত্তা ও সংবিধান বর্ণিত মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।