শফিউল আলম, রাউজানঃ চট্টগ্রামের রাউজানের ঐতিহ্যবাহী ১৮০ বছরের পুরনো পাঁচদিনব্যাপী মহামুনি মেলা শুরু হয়েছে।
১৩ এপ্রিল (রবিবার) ১৪৩১ বাংলা বর্ষকে বিদায় ১৪৩১ বাংলা নবর্বষকে স্বাগত জানিয়ে বৌদ্ব ধর্মীয় অনুষ্টানের মাধ্যমে মেলা শুরু হয় । সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসতে শুরু করেন বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের আধিবাসী ও বাঙালীরা। তাদেও পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে প্রাচীন এ মেলা। মেলার প্রধান আর্কষণ হলো ‘পানি খেলা’। পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসী নারীর-পুরুষেরা রং মিশ্রিত পানি একে অন্যের গায়ে ছুড়ে মেরে উৎসবে মেতে উঠেন। যা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। মেলাকে ঘিরে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটকসহ গ্রামের মেয়েদের নৃত্যানুষ্ঠান সহ নানা কর্মসূচী পালন করা হয়। বসানো হয় গ্রামীণ মেলা।
জানা যায়, উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নের মহামুনি গ্রামের একটি মন্দিরকে কেন্দ্র করে ১৮৪৩ সালে প্রথম মং সার্কেল রাজা বাংলা বর্ষের চৈত্রের শেষ তারিখে মেলার আয়োজন করেন। পরবর্তীতে মেলাটি মহামুনি মেলা নামে পরিচিত লাভ করে। চৈত্র সংক্রান্তির দিন তিন পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পুণ্যার্থীরা সারাদিন অবস্থান শেষে সন্ধ্যায় বুদ্ধের পুণ্য লাভের মধ্য দিয়ে বরণ করে নেয় নতুন বছরকে। একই সাথে তারা সেখানে রাত্রি যাপন করেন।
উপজেলার বিভিন্ন প্রান্থসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের আধিবাসীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠে এ মেলা। স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতি বছর মহামুনি গ্রামে মেলাকে ঘিরে উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সেখানে তিন পার্বত্য জেলার রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান এর পাহাড়ী এলাকা থেকে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের নারী পুরুষ, যুবক যুবতী, কিশোর কিশোরী দল বেধে কার, মাইক্রেবাস, জীপ, সিএনজি অটোরিক্সায় করে মাহামুনি মন্দিরে আসেন। ১৪৩১ সালের বাংলা নববর্ষকে বিদায় ও ১৪৩২ সালের বাংলা নববর্ষকে বরন করতে মহামুনি মেলায় পাহাড়ীরা ছাড়াও বাঙালীরা ছুটে আসেন। মহামুনি মেলা পাহাড়ী বাঙ্গালীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, নিরাপত্তার জন্য বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাউজান থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ আনা হয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তারপরও বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।