ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি: জিয়া উদ্দীন কাজল নিখোঁজ বা অপহরণ হয়েছে বলে কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় মিথ্যা মামলা করার পর পুলিশ তাৎক্ষণিক ভাবে তৎপরতা শুরু করে অনেক দুর তদন্তে আগাইয়া গেছেন। এমনকি গত ১০ এপ্রিল কাজলের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলও তার নিকটাত্মীয় থেকে উদ্ধার করে। ঐ সময় স্থানীয়দের জবানবন্দীতে ফুটে উঠেছে সাজানো অপহরন নাটকের মুল কাহিনী।
তাদের মতে, নিখোঁজ জিয়াউদ্দিন কাজল নিজ বাড়ী খুটাখালী থেকে প্রথমে ডুলাহাজারা পরে তার শাশুর বাড়ী পোকখালীতে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকায় নানা মহলে রহস্য দানা বেধেঁছে। বর্তমানে অপহৃত দাবিদার কাজল ঈদগাঁও থানার পোকখালী এলাকায় শশুরের বাসায় রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন তাঁর দুঃসম্পর্কিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্যালক।
অনেকেই মন্তব্য করেছেন-অপহরণের ঘটনাটি সাজানো নাটক, পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যে প্রনোদিত বানানো। কারণ গত ৬ এপ্রিল রাতে চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী হেফজখানা মোড়ে জিয়া উদ্দীন কাজলের সাথে কথা কাটাকাটি ও মারামারির ঘটনা ঘটে স্থানীয় রাশেদুল ইসলামের সাথে। এ ঘটনাকে পুঁজি করে কাজলের স্ত্রী নুসরাত জাহান রিফা দু’দফে মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ সম্মেলন করে। এমনকি থানায় উভয় পক্ষ পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে। এতে নিরীহ বেশ ক’জনকে আসামী করা হয়েছে বলে দাবী করছেন অপর মামলার বাদী জাকেরা বেগমের স্বামী শিব্বির আহমদ।
তিনি বলেন, কাজলের মোটর সাইকেল উদ্ধারের পর তার নানা নাটকীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের কাছে। কেননা, ঘটনার দিন রাতে কাজলের স্ত্রী রিফা ও বোনরা মিলে তাকে ইজিবাইক যোগে বাড়ীতে নিয়ে গেছেন। যার জবানবন্দি তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ আবুল খায়েরকে দিয়েছেন ঐ ইজিবাইকের চালক আবদুল মান্নান। পরে সে এমনকি স্বেচ্ছায় স্বশরীরে অতি গোপনে ঈদগাঁওর পোকখালীতে কিভাবে গেলেন? তাহলে তার স্ত্রী কিভাবে দাবি করলেন অপহৃত হয়েছেন? সে প্রশ্নও অধরা রয়ে গেছে।
খুটাখালীর নাসির উদ্দীন বাবুলসহ এখন সকল ব্যবসায়িরা বলছেন সেটা অপহরণের সাজানো নাটক। নিখোঁজ বা অপহরণের কথা বলে সবার টাকা মেরে দেওয়ার একটি ফন্দি তৈরি করেছেন কাজল। তার বিরুদ্ধে অর্ধডজন মামলা রয়েছে। মামলাগুলো যথাক্রমে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকার চেক মামলা সিআর নং -৩৩৭, তারিখ ৭/২ /২৪ ইং, কক্সবাজার জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট, চকরিয়া চৌকি আদালতে সিআর মামলা নং ১৮৫৬/২০২৩ তারিখ ৩/৯/২৪ ইং। বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত চকরিয়ায় অপর সিআর মামলা নং ২২৩২/২৪ তারিখ-৯/৯/২৪ ইং, এছাড়াও চকরিয়া থানায় মামলা নং- ৮৬/৬ তারিখ ৪/১/২৪ ইং, মামলা নং-১৭/১৪০ তারিখ ১২/৮/২৪ ইং, মামলা নং- ৪১/৪০ তারিখ ১৫/১/২০২৫ ইং ও মামলা নং-৩১/১৩১ তারিখ ২২/৩/২৫ ইং। আসলে অপহরণের বিষয়টি সম্পূর্ণ সাজানো নাটক বলে মনে হচ্ছে।
চকরিয়া থানায় এজাহার দায়েরকারী অপহৃতের স্ত্রী নুসরাত জাহান রিফা’র মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এমন কি কাজলের সাথেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, কাজলের নিখোঁজের ঘটনাটি অপহরণের ঘটনা না পূর্বপরিকল্পিত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোন হীন উদ্দেশ্যে এবং কাউকে বেকায়দায় ফেলার জন্য কী এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে তাও দেখছেন পুলিশ।