এই ভুলগুলো কখনোই করবেন না

অনেকেরই ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে। কিন্তু তারা তাদের গাড়ির প্রতি যত্নবান নন। ফলে নতুন গাড়ি কেনার কিছুদিন পরই নষ্ট হয়। অথচ গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিয়মিত সার্ভিস করানোর পরামর্শ দেন।

অধিকাংশ অটোমোবাইল সংস্থার পরামর্শ থাকে নির্দিষ্ট কিছু কিলোমিটার পথ গাড়ি চালানোর পর যেন ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করা হয়। থাম্ব রুল হিসাবে বলা হয়, ৩০০০ কিলোমিটার অতিক্রম করলে গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল বদলে নেওয়া উচিত। কিন্তু বহু মানুষ আছেন যারা উদাসীনতার ফলে ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করতেই ভুলে যান। তৎক্ষণাৎ এর ফলাফল না পেলেও ধীরে ধীরে এই ভুলের ফল ভোগ করতে শুরু করেন গাড়ি মালিকরা।

গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল সময় মতো পরিবর্তন না করা হলে একাধিক সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে। এর ফলে শুধু ইঞ্জিন খারাপ হবে না, গাড়িতে ইঞ্জিন সংক্রান্ত একাধিক সমস্যা তৈরি হবে। যা নিরাময় করতে হয় আপানকে মেকানিকের সাহায্য নিতে হবে নয়তো গোটা ইঞ্জিনই বদলাতে হবে।

গাড়িতে ইঞ্জিন অয়েল কেন বদলানো হয়?
ইঞ্জিনে পর্যাপ্ত এবং পরিচ্ছন্ন তেল থাকলে তা মসৃণভাবে গাড়ি চালাতে সাহায্য করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এটি গাড়ির ইঞ্জিনকে লুব্রিকেট করতে সাহায্য করে এবং তা থেকেই তাপ সরবরাহ হয়। ইঞ্জিনে পর্যাপ্ত তেল থাকলে তা একাধিক যন্ত্র লুব্রিকেট করতে সাহায্য করে। গাড়িটিকে বছরের পর বছর কার্যকর রাখে। ইঞ্জিন অয়েল যদি পরিবর্তন না হয় তাহলে জং ধরে যেতে পারে গাড়িতে।

গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল কখন বদলানো উচিত?
৩০০০ কিলোমিটার চালানোর পর গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থা কিয়ার দাবি, বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির ফলে ১১০০০ থেকে ১৫০০০ কিমির পর ইঞ্জিন ওয়েল বদলানো উচিত। সংস্থার মতে, ৩০০০ কিমি মাইলের পর ইঞ্জিন অয়েল বদলানো বর্তমানে একটা মিথ। বেশিরভাগ মানুষ জানেন না বলে এই প্রথাগত নিয়ম মেনে আসছেন।

আপনার গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল কত কিমির পর পরিবর্তন করা উচিত তা অনেকটা নির্ভর করে আপনি কোন রাস্তায় বেশি চালান। বিশদে জানতে গাড়ির ম্যানুয়াল যাচাই করতে পারে অথবা প্রস্তুতকারী সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করতে পারেন।

রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে পড়বে গাড়ি
​গাইডলাইন অনুসারে যদি গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল না পরিবর্তন করেন তাহলে ইঞ্জিনের যন্ত্রগুলোর মধ্যে ঘর্ষণ লাগতে পারে, মাইলেজ কমে যাবে। ইঞ্জিন পারফরম্যান্স দুর্বল হয়ে যাবে এবং সবশেষে ইঞ্জিন সম্পূর্ণভাবে বিকল হয়ে যাবে। আর ইঞ্জিন খারাপ হলে তা সারাতে একগাদা টাকা খরচ করতে হবে। এমনকি গোটা ইঞ্জিনও পরিবর্তন করার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

গরমে টগবগ করে ফুটবে
ইতিমধ্যে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ। চাদফাঁটা গরম থেকে বাচতে নানা উপায় খুঁজছে মানুষ। এমতাবস্থায় যদি ঠিক সময় অন্তর ইঞ্জিন অয়েল না বদলানো হয় তাহলে ইঞ্জিন নোংরা হতে শুরু করবে এবং ধীরে ধীরে গরম হতে শুরু করবে যন্ত্রটি।

বছরে একবারও ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন না করলে?
কেউ যদি টানা বছর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন না করেন সেক্ষেত্রে কি হতে পারে? এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখা ভালো, ইঞ্জিন অয়েল বছরের হিসেবে সাধারণত বদলানো হয় না। উক্ত যানবাহনটি কত কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছে তার ওপর নির্ভর করে। যদিও অনেক অটোমোবাইল সংস্থা বছরে দুইবার ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করার নিদান দিয়ে থাকে।

কীভাবে বুঝবেন?
কীভাবে বুঝব যে ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করতে হবে? এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ইঞ্জিনের আওয়াজ, জ্বালানি খরচ, অনিয়মিত অয়েল টেক্সচার, অয়েল লেভেল পড়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখলে বুঝতে হবে গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করা দরকার।