শামসু উদ্দীন :::
দেশ বিদেশে পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষনীয সপটগুলোর মধ্যে অন্যতম সেন্টমার্টিনদ্বীপ এ দ্বীপের চর্তুরদিকে প্রবাল দ্বারা আবৃত্ত। এর ভূগর্ভের সাথে টেকনাফের নাইট্যং পাড়া পাহাড়ের তলদেশে পাথরের স্রোত দ্বারা জারী রয়েছে। এ তথ্য ভূতত্ববিদদের। টেকনাফ থেকে প্রায় ১০ কিঃ মিটার দক্ষিণে নাফনদীর মোহনা ও সাগরে এ দ্বীপটির অবস্থান। গভেষকদের মতে প্রায় ৫ হাজার পূর্বে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ বদরমোকামের মূল ভূমির অংশ ছিল এ দ্বীপটি। কিন্তু কালের পরিক্রমায় এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে ধীরে ধীরে এটি সমূদ্রের নিচে তলিয়ে গিয়ে জীববৈচিত্র হারিয়ে যাচ্ছে।
ইতিহাসবিদ এবং গভেষকদের মতে প্রায় ৪৫০ বছর পূর্বে বর্তমান সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পাড়া জেগে উঠে। এর ১ শত বছর পর উত্তর পাড়া ও পরবর্তী ১ শত মধ্যে বাকি অংশ জেড়ে উঠে। প্রায় ২৫০ বছর পূর্বে আরব বণিকদের নজরে আসে দ্বীপটি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে বানিজ্যের সময় আরব বণিকেরা এ দ্বীপটিতে বিশ্রাম নিতো। তখন তারা এ দ্বীপটির নামকরন করেছিল জাজিরা নামে উপদ্বীপ। পরবর্তী কালে এটি নারিকেল জিঞ্জিরা নামে পরিচিত হয়। বিভিন্ন কার্বন ভেপিংয়ের মাধ্যমে জানা যায়, প্রায় ৩৩ হাজার পূর্বে এ দ্বীপে প্রাণের অস্তিত্ব্য ছিল। স্বচ্ছ পানি ও চারপাশজুড়ে প্রবাল পাথর বৈষ্ঠিত দ্বীপটি খুবই মনোরম। দেশের সর্ব দক্ষিণ-পূর্বে মিয়ানমার সীমান্তের পাশ্ববর্তী ৮৯.৩ বর্গকিলোমিটার জুড়ে এটির অবস্থান। দেশের একমাত্র এ প্রবাল দ্বীপ সামুদ্রিক কাছিমের প্রজন্ম ক্ষেত্রে ও। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সেন্টমার্টিনে ৬৮ প্রজাতির প্রবাল, ১৫১ প্রজাতির শৈবাল, ১৯১ প্রজাতির মোলাকা বা কুড়ি জাতীয় প্রাণী, ৪০ প্রজাতির কাঁকড়া, ২৩৪ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ৫ প্রজাতির ডলফিন, ৪ প্রজাতির উভয় চর প্রাণী, ২৮ প্রজাতির স্থন্যপায়ী প্রাণী, ১৭৫ প্রজাতির বসবাস ছিল।
এসব প্রাণীর অনেক গুলোই এখন বিলুপ্তির পথে। জলবায়ু পরিবর্তন ও দুষণের কারণে ক্রমান্নয়ে হারিয়ে যাচ্ছে এ জীব বৈচিত্র। সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিন-পূর্ব পাশে আরো একটি জেগে উঠেছে ছেঁড়া দ্বীপ। এ দ্বীপের চার দিকে রয়েছে প্রবাল পাথর, ঝিনুক, শামুকের, খোলম, চুনা, পাথরসহ কয়েকশ প্রজাতির সামুদ্রিক জীব। অতিরিক্ত পর্যটচকের চাপ পর্যাপ্ত পরিমান হোটেল-মোটেল নির্মান নির্বিচারে গাছ কেটে বন উজাড় মানুষের মলমূত্র সহ নানা বর্জ্য প্রদার্থ ও প্লাস্টিক সামগ্রী বর্জ্যে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটি পরিবেশ প্রতিবেশে ব্যপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
এছাড়া পর্যটকদের চাহিদা মেটাতে গিয়ে বৈদ্যুত্তিক পাম্প দিয়ে প্রতিনিয়ত মিষ্টি পানি ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন, বহুতল ভবন নির্মান, ভবনের পযঃ নিস্কাশন ব্যবস্থা এবং খোলা পায়খানা নির্মানসহ নানা পরিবেশ বিধ্বংর্স কর্মকান্ডের কারণে হুমকির মূখে রয়েছে প্রবালসহ জীব বৈচিত্র। দ্বীপটির স্থায়ী জনসংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। এছাড়া প্রতিদিন গড়ে আরো ১০ হাজার পর্যটক সেখানে অবস্থান ও বিচরন করে। ফলে ২০ হাজার মানুষের চাপ নিতে হয় দ্বীপটিকে। তাই দ্বীপটি এতোটায় সংকটপন্ন হয়ে পড়েছে যে, হারাতে বসসে তাররূপ ও সৌন্দর্য। চর্তুরদিকে বাতাসে দূর্গন্ধ। বলতে গেলে সেন্টমার্টিন তার জীব বৈচিত্র্য হারিয়ে এখন মূমূর্ষ হয়ে পড়েছে। পরিবেশবাদী কিছু সংগঠন ছাড়া এর অযত্ন ও অবহেলা নিয়ে কাউকে চিন্তিত দেখা যায় না।সেন্টমার্টি দ্বীপের প্রকৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষায় যে প্লাস্টিকের বোতলসহ প্রবেশ সম্পূর্ন নিষিদ্ধ করা জরুরী। সেন্টমার্টিন ও ছেড়াদ্বীপের আন্ডার ওয়াটার ক্লিনিংয়ের জন্য পানির নিচে যে প্লাস্টিক ও অন্যান্য ময়লা রয়েছে। তা নিয়মিত পরিস্কার করা উচিত। পরামর্শ পর্যটকদের আগমনকে নিরুৎসাহিত না করে বরং স্থানীয় নীতিমালা প্রনয়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে বাচাঁনোর চেষ্টা করা উচিত। তাহলে সেন্টমার্টিন দ্বীপ টিকে থাকবে শত-হাজার বছর এবং রক্ষা পাবে জীব বৈচিত্র্য










