ফোরকানের স্বীকারোক্তি, মিয়ানমার থেকে সরাসরি আনতেন ইয়াবা

বাকলিয়া থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার ইয়াবা ব্যবসায়ী মো. ফোরকান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে ফোরকান জানিয়েছেন, তিনি মিয়ানমার থেকে সরাসরি কক্সবাজারের টেকনাফ ও চট্টগ্রামের আনোয়ারা হয়ে সমুদ্রপথে ইয়াবা নিয়ে আসতেন।

বুধবার (১৮ নভেম্বর) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হোসেন মোহাম্মদ রেজার আদালতে ফোরকান স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, চার দিনের রিমান্ড শেষে ফোরকানকে আদালতে হাজির করা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি তিনি। জবানবন্দিতে ফোরকান জানিয়েছেন, তিনি মিয়ানমার থেকে সরাসরি কক্সবাজারের টেকনাফ ও চট্টগ্রামের আনোয়ারা হয়ে সমুদ্রপথে ইয়াবা নিয়ে আসতেন। এসব ইয়াবা সড়ক ও নৌ পথে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাহকের মাধ্যমে পাঠিয়ে বিক্রি করেন।

ওসি মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, ফোরকান জানিয়েছেন, ইয়াবা বিক্রি করে কিছু রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী অস্ত্র সংগ্রহ করেন। এসব অস্ত্র তারা আধিপত্য বিস্তারে ব্যবহার করেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বাচাই করে বাহক খুঁজে বের করে তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় পাঠান। কোনো রোহিঙ্গা তাদের প্রস্তাবে রাজি না হলে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কাজ করান। ফোরকান আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন সেগুলো যাচাই বাচাই করছি।

গত ৫ নভেম্বর টেকনাফ থেকে ঢাকায় নিয়ে বিক্রির পর ঢাকা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার পথে বাকলিয়া থেকে অস্ত্রসহ আব্দুর রাজ্জাক নামে একজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্যে টেকনাফ হ্নীলা লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে মো. কামাল নামে আরও একজনকে আটক করে বাকলিয়া থানা পুলিশ।

আব্দুর রাজ্জাক ও মো. কামালকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে আসে বাকলিয়া থানা পুলিশ। রিমান্ডে তাদের দুইজনের কাছ থেকে ফোরকান প্রকাশ মাসুদের বিষয়ে তথ্য পায় পুলিশ। ১৩ নভেম্বর সকালে অভিযান চালিয়ে ফোরকানকে আটক করে পুলিশ।

ফোরকানের দেওয়া তথ্যে অভিযান চালিয়ে মোবারক হোসেন ও মো. রাসেলকে আটক করে এবং বহদ্দারহাটে ফোরকানের নিউ চাঁন্দগাও আবাসিকের বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ নগদ ৮ লাখ ৮৩ হাজার ৬২২ টাকা, ২৩ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১২টি চেক বই উদ্ধার করে এবং ফোরকানের স্ত্রী শামীম আরা শমীকে আটক করে। এ ঘটনায় পৃথক মামলা দায়ের হয়।

১৪ নভেম্বর ফোরকান, তার স্ত্রী শামীম আরা শমী, মোবারক হোসেন ও মো. রাসেলকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে আসে বাকলিয়া থানা পুলিশ। রিমান্ডে ফোরকানের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে মো. তাহের, মো. আলী জোহর ও আসমা আক্তার নামে আরও তিন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে বাকলিয়া থানা পুলিশ।