মার্কিন জায়ান্ট গুগল হুয়াওয়ের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি বাতিলের পর আরও কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের চুক্তি বাতিল করেছে। এরপর থেকে শঙ্কায় পড়েছে হুয়াওয়ের ব্যবহারকারীরা।
উদ্বেগে থাকা ব্যবহারকারীদের আশ্বস্ত করলেও ঠিক ধরে রাখতে পারছে না চীনা জায়ান্টটি।
হুয়াওয়ের চলতি বছরের সেরা ফ্ল্যাগশিপের তকমা পাওয়া পি৩০ প্রো ডিভাইসটির দাম যুক্তরাজ্যে ৯০ শতাংশ কমে গেছে বলে জানাচ্ছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ফোর্বস।
ক্যামেরা, ডিজাইন থেকে শুরু করে পারফরমেন্সে চলতি বছরের সেরা স্মার্টফোনটির দাম ছিল ১১৫০ মার্কিন ডলার। ফোনটি এখন ছাড় দিয়ে দেশটিতে মাত্র ১৩০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
তবে এটি কোন শোরুমে নয়, বরং একটি ওয়েবসাইটে এমন দামে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছে ফোর্বস।
ফোর্বসের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, দেশটিতে এক বিক্রেতা ভালো কন্ডিশনের একটি হুয়াওয়ে পি৩০ প্রো বিক্রির জন্য দেশটির মোবাইল ফোন বেচাকেনার জনপ্রিয় একটি সাইটে বিজ্ঞাপন দিয়েছে। সেখানে তার ১১৫০ ডলার মূল্যের ফোনটি ১৩০ ডলারে বিক্রি করতে চায় বলে জানায়। যেখানে বিক্রেতা তার ফোনে ৯০ শতাংশ লোকসান দিতে চান।
একইভাবে ওই সাইটে স্যামসাং এস১০ প্লাস মডেলের ফোন বিক্রির জন্য একটি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, সেটিও ভালো ‘কন্ডিশনের’, এবং তার দাম রাখা হয়েছে ৬৫০ মার্কিন ডলার। যেটা আসল দামের চেয়ে ৪৫ শতাংশ কম।
তবে ফোর্বস এটা নিশ্চিত করেছে যে, হুয়াওয়ে পি৩০ প্রো ফ্ল্যাগশিপটির রিটেইল প্রাইস দেশটিতে ১৩৯৮ মার্কিন ডলার।
গত কয়েক বছর থেকে স্যামসাং, অ্যাপলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজেদের ডিভাইস উন্নয়ন করার কাজ করে যাচ্ছে হুয়াওয়ে। এখন বিশ্ববাজারে যে কয়েকটি ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইস রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম একটি ব্র্যান্ড হুয়াওয়ে। কয়েক বছর থেকেই হুয়াওয়ে ৫০ শতাংশ করে বাজার প্রবৃদ্ধি করে আসছে।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইডিসির প্রথম প্রান্তিকের হিসাব বলছে, হুয়াওয়ে তাদের ফ্ল্যাগশিপ ফোনের বাজারে এমন একটা অবস্থায় চলে গেছে যা দক্ষিণ কোরিয় ব্র্যান্ড স্যামসাংয়ের প্রায় সমান।
গত ১৫ মে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বাণিজ্য বিভাগ হুয়াওয়েকে দেশটিতে কালো তালিকাভুক্ত করে। হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের অভিযোগ করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ১৯ মে হুয়াওয়ের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি বাতিল করে গুগল। ফলে হুয়াওয়ের ফোনে আর গুগলের ম্যাপ, প্লে স্টোর, জিমেইল, ক্রোমের মতো কিছু সেবা ব্যবহার করতে পারবে না হুয়াওয়ে।
এরপর আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক গুটিয়ে নেয়। ফলে বিশ্বব্যাপী কিছুটা চাপে পড়ে চীনা প্রযুক্তি জায়ান্টটি।