কক্সবাজারে ১২ কিলোমিটার দৃষ্টিনন্দন সুড়ঙ্গ সড়কের পরিকল্পনা

কক্সবাজারে ১২ কিলোমিটার দৃষ্টিনন্দন সুড়ঙ্গ সড়কের পরিকল্পনা
উত্তাল সাগরের তীব্র ঢেউয়ে ভাঙছে কক্সবাজার সৈকত। স্থায়ী সমাধানে এবার ১২ কিলোমিটার দৃষ্টিনন্দন সুড়ঙ্গ সড়কের পরিকল্পনা নিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

৩ হাজার ১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন সুড়ঙ্গ সড়ক। পর্যটকদের সুবিধায় ৫ কিলোমিটারে থাকবে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা। প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পেলে আগামী নভেম্বর থেকে কাজ শুরুর আশা করছে মন্ত্রণালয়।

সমুদ্র প্রচণ্ড উত্তাল, তার ওপর চলছে পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাব। স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ ফুট উচ্চতার ঢেউ আঘাত হানছে উপকূলে। এ অবস্থা ঠেকাতে জিও টিউব বাঁধের কারণে আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে বঙ্গোপসাগর।

উত্তাল ঢেউয়ে বিলীন হচ্ছে ঝাউগাছ, তলিয়ে গেছে কয়েকটি স্থাপনা। তীব্র ভাঙনের মুখে মূল সৈকতের ৩ কিলোমিটার। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা।

তারা বলছেন, ভাঙতে ভাঙতে হোটেল-মোটেলগুলোর একেবারে কাছে চলে আসছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে কক্সবাজারে পর্যটক আসা কমে যাবে। এখন যারা আসছেন তারা পানিতে নামতে পারছেন না, বিচে হাঁটাচলা করতে পারছেন না। কেননা সবপাড়ই ভেঙে যাচ্ছে।

গত কয়েক বছর ধরে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতকে আন্তর্জাতিক আদলে গড়ে তুলতে দৃষ্টিনন্দন ১২ কিলোমিটার সুড়ঙ্গ সড়কের পরিকল্পনা করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সড়কটি বিমানবন্দর থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে সৈকতের মেরিন ড্রাইভের কলাতলী পয়েন্টে। বালুচরের ঝাউবাগান ঠিক রেখেই নির্মিত হবে সড়কটি।

যেখানে থাকবে শপিংমল, দোকানপাট, ওয়াশরুম, লকার, কফিশপ ও রেস্তোরাঁ। চেয়ারে বসে কাঁচের জানালা দিয়ে দেখা যাবে সমুদ্র ও সূর্যাস্ত। সড়কে থাকবে দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য, বিনোদন পার্ক, মুক্তমঞ্চ, গাড়ি পার্কিং, ওয়াকওয়ে, বাইসাইকেল ও হাঁটার পাশাপাশি বিশ্রামের ব্যবস্থা। এর মধ্যে প্রকল্পের প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা যত ধরনের স্টেক হোল্ডার আছে তাদের সবার সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে এবং সমন্বিতভাবে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করেছি। সেখানকার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রকল্পগুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার জানালেন, একনেকে অনুমোদন পেলে আগামী নভেম্বরে শুরু হবে প্রকল্পের কাজ।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ আমরা একটা নকশা করেছি। ইনশাআল্লাহ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০০ বছরের ডেল্টা প্লান দিয়েছেন। সেখানে কিন্তু আমরা কাজ শুরু করেছি। কক্সবাজারের প্রতি উনার (প্রধানমন্ত্রী) বিশেষ দৃষ্টি আছে। সে কারণে অনেক উন্নয়ন প্রকল্প চলছে কক্সবাজারে। সে কারণে আমরা আশা করছি, নভেম্বর থেকেই আমরা স্থায়ী বাঁধ প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারব।

সাড়ে ৮ কিলোমিটারের স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ বা সড়কটি নির্মাণে ব্যয় হবে ৩ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ৩ বছর।