তাইজুলকে নিয়ে নামছে বাংলাদেশ!

টি-টোয়েন্টি আর টেস্টে যাই হোক, ওয়ানডেতে নিজেদের দাপট অব্যাহত রেখেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এই ফরম্যাটেও লাগলো পরাজয়ের ধাক্কা। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৩০৩ রান করেও জিম্বাবুয়ের কাছে হেরে যায় টাইগাররা। খেই হারানো বোলিংয়ের সঙ্গে বাজে ফিল্ডিংয়ে হজম করতে হয় ৫ উইকেটের হার। বাঁচামরার দ্বিতীয় ম্যাচে তাই অনেক হিসাব-নিকাশ কষে মাঠে নামছে তামিম ইকবাল বাহিনী। একাদশে আসতে পারে পরিবর্তন। তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে আজ। হারারেতে খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় দুপুর সোয়া ১টায়। সর্বশেষ ২০১৩ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতে জিম্বাবুয়ে। এরপর টানা ১৯ ম্যাচে টাইগারদের কাছে পাত্তাই পায়নি দলটি।
সেই জিম্বাবুয়ে ৬ রানে ২ উইকেট হারানোর পরও সিকান্দার রাজা-ইনোসেন্ট কাইয়ার জোড়া সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের ৩০৪ রানের টাগের্টকে সহজ বানিয়ে ফেলে। ম্যাচের পর জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক রেজিস চাকাভার আত্মবিশ্বাস দেখে মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশ আরো ২০-২৫ রান বেশি করলেও তাদের সমস্যা হতো না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে সিরিজে প্রথমবারের মতো একাদশে জায়গা পান তাইজুল ইসলাম। দাপুটে জয়ের ম্যাচে তাইজুল নেন পাঁচ উইকেট। তবে এ বাঁহাতি স্পিনারকে বাইরে রেখে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডের একাদশ সাজায় বাংলাদেশের থিঙ্ক ট্যাংক । ৫ উইকেটে হারের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেন, ‘ম্যাচে একজন বাঁহাতি স্পিনার নিলে হয়তো ভালো হতো।’ আজ হারাতেতে সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে একাদশে সুযোগ পেতে পারেন তাইজুল। প্রথম ওয়ানডেতে বোলিং স্ট্র্যাটেজি কাজে আসেনি বাংলাদেশের। তিন পেসারের সঙ্গে অফস্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে খেলতে নামে সফরকারীরা। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মাহমদুল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব- তিনজনই ‘অফস্পিনার’। অথচ পরিসংখ্যান বলে বাঁহাতি স্পিনে বরাবরই দুর্বল জিম্বাবুয়ে। যদিও সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে এক ওভারে ৩৪ রান দেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। কিন্তু ক্রিকেটে এরকম বাজে দিন কী প্রতিদিন আসে! জিম্বাবুয়ের ৬ ডানহাতি ব্যাটারের বিরুদ্ধে একজন বাঁহাতি স্পিনার থাকলে বোলিংয়ে বৈচিত্র্য থাকতো। তামিম বলেন, ‘চিন্তা করে দেখলে অবশ্যই মনে হচ্ছে (একজন বাঁহাতি স্পিনার থাকলো ভালো হতো)। তবে আমাদের সিদ্ধান্তকে ভুল বলবো না। আগে বোলিং করলে হয়তো চিত্রটা ভিন্ন হতো। আমাদের পরের ম্যাচের কম্বিনেশন কী হবে তা নিয়ে ভাবতে হবে।’ শুধু বোলারদের দোষ দিতে নারাজ তামিম। প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের জয়ের দুই নায়ক সিকান্দার রাজা ও ইনোসেন্ট কাইয়া- দু’জনই একবার করে জীবন পান। এছাড়াও দুটি ক্যাচ ফেলেন বাংলাদেশি ফিল্ডাররা। তামিম তাই ফিল্ডিংয়েও উন্নতির জোর দিচ্ছেন। তামিম বলেন, ‘আমাদের তো সুযোগ ছিল। আমরা সেগুলো হাতছাড়া করেছি।’ ব্যাটিং নিয়েও আক্ষেপ তামিমের। সংগ্রহটা ৩০৩ না হয়ে ৩২০-৩২৫ হতে পারতো। ৪৬ ওভারে ২ উইকেটে বাংলাদেশের রান ছিল ২৬৭। হাতে তখনো ৮ উইকেট। তবে ৫০ ছোঁয়ার আগে দেখেশুনে খেলছিলেন মুশফিকুর রহীম। শেষ ১৮ বলে ২২ রান নিতে সমর্থ্য হয় বাংলাদেশ। শুরুর ১০-১৫ ওভারে বাংলাদেশ ব্যাট করেছে টেস্ট মেজাজে। মাঝের ওভারগুলোতেও ধীরগতিতে এগিয়েছে টাইগারদের ইনিংস। দ্বিতীয় পাওয়ার প্লেতে উইকেট ধরে রাখার দিকে মনোযোগ দিতে গিয়ে ৩০ ওভারে বাংলাদেশ তুলতে পারে ১৬২ রান। সেখানে রান তাড়ায় জিম্বাবুয়ে তুলেছে ১৯৪। তামিম বলেন, ‘আগে ব্যাটিং করলে, এই কন্ডিশনে প্রথম ১০-২০ ওভারে বোলারের জন্য কিছু থাকে। এরপর সহজ হয়ে যায়। আমরা সেটা ভালোই সামাল দিই। আমাদের জুটিও ভালো হয়েছিল। কিন্তু শেষটা ভালো হয়নি।’ তামিম বলেন, ‘আমাদের আরো ১৫-২০ রান বেশি করা উচিত ছিল। প্রথম ১০-১৫ ওভার ব্যাট করেছি টেস্টের মতো। আমরা ১ উইকেটে ২৫০ রানের মতো অবস্থায় ছিলাম। এ অবস্থায় থাকলে একটু দ্রুত রান তোলা দরকার ছিল, যেন আমরা ওই অতিরিক্ত ১৫-২০ রান করতে পারি।’