পৃথিবীর ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধে এতবেশি প্রাণ বলিদানের দৃষ্টান্ত নেই

    প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও খ্যাতিমান সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেছেন পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে এতবেশি প্রাণ বলিদানের দৃষ্টান্ত নেই। ৩০ লাখ বাঙালি আত্মত্যাগ মায়ের অশ্রুধারা ও বীরের রক্তস্রোতে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিজয় একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি মাত্র অঙ্গুলি হেলনে একটি নিরস্ত্র জাতি সামগ্রিকভাবেই সশস্ত্র হয়ে উঠেছিল। বঙ্গবন্ধু ২৬শে মার্চের অনেক আগে থেকেই বাঙালি জাতিকে সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রামে প্রাণিত করেছিলেন। তাই স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার সাথে সাথে এই পবিত্র মাতৃভূমি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল। এ গৌরবগাঁথা পৃথিবীর বিভিন্ন জাতির মুক্তিসংগ্রামকে উদীপ্ত করেছিল। তিনি আজ বিকেলে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর মাসকে বরণ এবং মুক্তিযুদ্ধে উংসর্গিত শহীদদের স্মরণে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন। তিনি আরো বলেন, চরম মূল্যে অর্জিত এ স্বাধীনতাকে বানচাল করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির প্রেতাত্মারা বারবার বিষাক্ত নিঃশ্বাস ফেলেছে। কিন্তু তারা কখনো সফল হয়নি। এ ষড়যন্ত্রকারীরা নানান আবরণে এখনো ঘাঁপটি মেরে আছেন। তাদেরকে চিহ্নিত করে নির্মূল করতে নতুন প্রজন্মকে শানিত করতে হবে। তিনি বঙ্গবন্ধুর তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সংবিধানের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে অভিহিত করে বলেন, শেখ হাসিনা বাঙালি জাতিসত্তার রক্ষাকবচ। তিনি বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছেন। তিনি উন্নয়নের সকল সুচোখে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া ও অর্জনের ক্ষেত্রে আজ বিশ্বের বিস্ময়। বাঙালি জাতিসত্তা বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত। এ অর্জনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নৌকা প্রতীকের বিজয়ের কোন বিকল্প নেই। বিশেষ অতিথির ভাষণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ড. মনজুরুল আমীন চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে একটি বিজয়ী জাতির স্বাধীনতা কখনো ব্যর্থ হতে পারে না। আমরা এ সত্যটিকে ধারণ করে যাচ্ছি বলেই কোন দুঃসময় চিরস্থায়ী হয়নি। শেখ হাসিনা আমাদের সুসময়ের ঠিকানা। সভাপতির ভাষণে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলার সহ-সভাপতি আলহাজ্ব এইচ এম সোহেল বলেন, মানব সভ্যতার ইতিহাসে যে কোন দেশের মুক্তিযুদ্ধ মানবতাকেই বিজয়ী করেছে। এই বিজয় আমাদের কাছে ভালবাসা ও আনুগত্যের ধন। এ ধনটিতে কোন পাপ স্পর্শ করতে পারে না। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিজয়ের মাস বরণে ও শহীদদের স্মরণে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন খ্যাতিমান ফ্যাশন ডিজাইনার ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রওশন আরা, মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক সংগঠক যদু গোপাল বৈষ্ণব, আওয়ামী লীগ নেতা দীপঙ্কর চৌধুরী কাজল, অলিদ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সংগঠক শওকত আলী সেলিম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আবুল কালাম আজাদ, কর্মাস কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি এম এ মান্নান শিমুল, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল বশর, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুর রশিদ লোকমান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক ইয়াছির আরাফাত, নগর শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি কামাল উদ্দিন চৌধুরী। আরো উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিকর্মী ডি কে দাশ মামুন, প্রণবরাজ বড়–য়া, মাস্টার বাবুল দাশ, রিংকু ভট্টাচার্য, প্রিয়াঙ্কা মল্লিক, কবি সজল দাশ, মাসুদ উদ্দিন হামেদ নেওয়াজ, এড. নজরুল ইসলাম, আরিফ মঈনুদ্দিন, টিপু শীল জয়দেব, গোপাল দাশ টিপু, নাছির উদ্দিন কুতুবী, বাহাদার হাসনাত উল্লাহ, জালাল উদ্দিন রানা, আরিফুর রহমান, কিশোর হাবিবুর রহমান, মুজিবুর রহমান, আসিফ ইকবাল, এম নিজাম উদ্দিন। সভার শুরুতেই মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের শুরুতেই ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের জননী ও বীর প্রতীক তারামান বিবি ও জামালখান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদুল আলমের মৃত্যুতে তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।