পেসারদের স্বর্গরাজ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেখানে প্রথমবারের মতো খেলার সুযোগ পেয়েছেন তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের এই সদস্য প্রথম ক্যারিবিয়ান মিশনে যাওয়ার আগে পুড়ছিলেন দারুণ আক্ষেপে। কারণ ইনজুরির কারণে তাকে রাখা হয়নি টেস্ট দলে। খেলার কথা শুধু ওয়ানডে আর টি- টোয়েন্টি। এতে তার মন ভলছিল না। অবশেষে তার মনের সেই আশা পূরণ হয়েছে। গতকাল তাকে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের জন্য দলে ডেকেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। দারুণ এই সংবাদ নিয়ে গতকালই দেশ ছেড়েছেন তিনি। যাওয়ার আগে শরিফুল বলেন, ‘আমি খুব রোমাঞ্চিত।

খুব ইচ্ছা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট খেলার। যাচ্ছি এখন। দেখা যাক যাওয়ার পরে কী হয়।’
তবে টেস্ট দলে জায়গা হলেও একাদশে সুযোগ মিলবে কিনা তা নিয়ে আছে সন্দেহ। প্রথম ম্যাচে তিন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান, সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও ইবাদত দারুণ বোলিং করেছেন। যে কারণে চতুর্থ পেসারের খুব একটা প্রয়োজন নেই। কিন্তু হতে পারে সেই তিনজনের একজনকে বিশ্রাম দিয়ে একাদশে শরিফুলকে জায়গা দিতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। তাই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে বাদ পড়ছেন কে! নাকি তরুণ পেসারকে বসে থাকতে হবে ড্রেসিং রুমেই!

শরিফুল ইসলামকে হঠাৎ করেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ পাঠানোর সিদ্ধান্ত কেন! এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচকরা কেউই মুখ খুলতে রাজি নয়। অবশ্য বিসিবি-ই তাদের সকলের মুখে তালা ঝুলিয়েছেন। তবে তরুণ এই পেসার জানিয়েছেন তাকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনই কল দিয়ে আগেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেতে বলেছেন। শরিফুল বলেন, ‘কালকে রাতে জেনেছি। পাপন স্যার ফোন দিয়েছিলেন। আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। পাপন স্যার ফোন দিয়ে বললেন। তো আমি বললাম, জ্বী স্যার যাবো।’ যেহেতু বোর্ড সভাপতি পাঠিয়েছেন সেই ক্ষেত্রে হতে পারে মোস্তাফিজকে টি- টোয়েন্টি ওয়ানডের জন্য বিশ্রাম দিয়ে একাদশে শরিফুলকে খেলানো হতে পারে।

তবে বিসিবি’র একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ‘আসলে শরিফুলের ২৪ তারিখ যাওয়ার কথা ছিল। ওর যদি ইনজুরি না হতো তাহলেতো শুরু থেকেই দলে থাকতো। এখন পাঠানো হচ্ছে কারণ যদি দলে কারো কোনো সমস্যা হয় বা ইনজুরি হয় সেই ক্ষেত্রে ব্যাকআপ থাকবে হাতে।’ গেল ১২ই জুন দৈনিক মানবজমিনকে একান্ত সাক্ষাৎকারে শরিফুল জানিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজে তিনি টেস্ট খেলা খুবই মিস করবেন। তিনি বলেছিলেন, ‘টেস্ট খেলার খুব ইচ্ছা ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে এমন সুযোগ আবার কবে পাবো- জানি না। সেখানে ডিউক বলে খেলা হবে। টেস্টে পেসারদের জন্য এই বলে অনেক সুবিধা থাকে। খেলতে পারলে ভালো হতো। সত্যি কথা বলতে কী আমি টেস্ট খেলাটা খুবই মিস করবো।’ তিনি বলেন, ‘(ডিউক বল) আসলে গল্প তো শুনেছি। এখনও ধরিনি। ধরার পর বুঝতে পারবো। অবশ্যই রোমাঞ্চিত।’

এরই মধ্যে ক্যারিবীয়ানদের বিপক্ষে বোলিংয়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুতও করেছে মানসিক ভাবে। তবে হোমওয়ার্কটা করতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘(হোমওয়ার্ক করার সময়) আসলে এখনও পাইনি আমি যা দেখেছি, ওইখানে বল জায়গায় করলেই সুবিধাটা পাওয়া যাচ্ছে। ওদের ক্ষেত্রেও, আমাদের ক্ষেত্রেও। চেষ্টা করবো লাইন ও লেংন্থ ঠিক রেখে বোলিং করার।’ ২০২১ সালের এপ্রিলে টেস্ট অভিষেক হওয়া শরিফুল এখন পর্যন্ত খেলেছেন চারটি টেস্টে।