রেমাক্রি ইউনিয়নে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আটজনের মৃত্যু

বান্দরবানে থানচি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি দুর্গম রেমাক্রি ইউনিয়নে গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পাড়াপ্রধানসহ আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এখনো ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচটি পাড়ায় ২৫ থেকে ৩০ জন ডায়রিয়ার রোগী রয়েছেন।

সেখানে বিজিবি ও স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসা দল থাকায় বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে রেমাক্রি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ জুন লোকজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতে শুরু করেন। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন নারিচ্যাপাড়ায়। সেখানে ২৪ পরিবারের অধিকাংশ ব্যক্তি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। এ ছাড়া ইয়ংনংপাড়া, উছোমংপাড়া, চিংসংপাড়া ও মেনতাংপাড়ায়ও ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ে।

 

নারিচ্যাপাড়ার ছয় পরিবার ছাড়া অন্য ব্যক্তিরা ভয়ে আন্ধারমানিক এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রেমাক্রি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাংচং ম্রো। তিনি বলেন, নারিচ্যাপাড়ায় আজ রুইরখ ম্রো (৫০) নামের এক ব্যক্তি ডায়রিয়ায় মারা গেছেন। এ ছাড়া ওই পাড়ায় এ সপ্তাহে লংঙি ম্রো (৪৫), চংদন ম্রো (৮) ও চংওই ম্রোর (৬) মৃত্যু হয়েছে।

ইউপি সদস্য মাংচং ম্রো আরও বলেন, ৭ জুন মেনতাংপাড়ার কার্বারি মেনতাং ম্রো, ৯ জুন চিংসংপাড়ার প্রেন্নয় ম্রো (১২), ১১ জুন উছোমংপাড়ার ডয়েনু মারমা (৩০) ও ১৩ জুন ইয়ংনংপাড়ার ক্রাইয়ম ম্রো (৬০) মারা যান। সেখানে এখনো ৩৫-৩০ জন ডায়রিয়ার রোগী রয়েছেন।

পানি দূষিত হয়ে বিভিন্ন পাড়ায় ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন রেমাক্রি ইউপি চেয়ারম্যান মুইসুইথুই মারমা। তিনি বলেন, পাড়াগুলো অত্যন্ত দুর্গম, মিয়ানমারের সীমান্তের কাছাকাছি সাঙ্গু সংরক্ষিত বনাঞ্চলসংলগ্ন এলাকায়। ইঞ্জিনচালিত নৌকা ছাড়া সেখানে যোগাযোগের কোনো ব্যবস্থা নেই। কয়েক দিন ধরে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি চিকিৎসা দল সেখানে কাজ করছে।

জানতে চাইলে থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন বলেন, ‘ডায়রিয়ায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। এ ছাড়া অসমর্থিত সূত্রে আরও তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।’

কয়েকজন ডায়রিয়ার রোগী থাকলেও, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে জানিয়ে মুরাদ হোসেন বলেন, পর্যাপ্ত চিকিৎসাসামগ্রীসহ একটি চিকিৎসা দল সেখানে সার্বক্ষণিক কাজ করছে। মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক না থাকায় আজ সর্বশেষ সংবাদ পাওয়া যায়নি।